স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষে নিম্নমানের কাগজে সনদ ও নম্বরপত্র দেওয়ার অভিযোগ করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে তাদের।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, “একজন শিক্ষার্থী চারটি বছর পরিশ্রম করে যা অর্জন করে, তার দালিলিক প্রমাণ হলো নম্বরপত্র ও সনদ। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সনদ খুবই উন্নত ও যথাযথ মান নিশ্চিত করে সতর্কতার সঙ্গে এবং নির্ভুলভাবে তৈরি করে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একদমই বিপরীত।”
তারা আরও বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে সনদ ও নম্বরপত্র দেওয়া হয়, তার কাগজের মান খুবই নিম্ন। সনদের লেখার ফ্রন্ট বা সাজানো সঠিকভাবে থাকে না। শিক্ষার্থীর নাম, ফলাফলে ভুল থাকে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের বানানেও অনেক সময় ভুল থাকে। এছাড়াও অ্যালাইনমেন্ট কোনো ডকুমেন্টকে আরও আকর্ষণীয় করে থাকে।” অ্যালাইনমেন্ট ঠিকভাবে না দেওয়ায় সনদ আকর্ষণীয় হচ্ছে না বলেও অভিযোগ তাদের।
এ বিষয়ে কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আফ্রিদি বলেন, “আমরা চারজন বন্ধু সনদ ওঠাই। কিন্তু কোনোটারই অ্যালাইনমেন্ট ঠিক ছিল না। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদে এত অসংগতি? এর চেয়ে নিজেরা বানিয়ে নিলেই আরো ভালো হতো।”
হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী অনিক চৌধুরী তপু বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নম্বরপত্রের ফ্রন্ট এবং অ্যালাইনমেন্টের নিম্নমান বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ বা বহুজাতিক কোম্পানিতে চাকরির জন্য আবেদনকারীদের একটি বড় চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করে। এমন মানহীন নম্বরপত্র প্রার্থীদের যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ তৈরি করে, যা তাদের স্বপ্ন পূরণের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।”
তিনি বলেন, “এটা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পেশাদারিত্ব ও শিক্ষার মান নিয়ে নেতিবাচক বার্তা দেয়। একজন সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে আশা থাকবে, নতুন প্রশাসন উন্নত ফরম্যাট এবং মানসম্মত ডিজাইন নিশ্চিত করতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
এ বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক গোলাম হায়দার বলেন, “বিভিন্ন বিভাগের ক্রেডিট কম-বেশি থাকে। এজন্য অনেক সময় অ্যালাইনমেন্ট কম বেশি হতে পারে। আমি তো টেকনিক্যাল না এ বিষয়ে। আমার যে প্রোগ্রামার আছেন, তিনি ভালো বলতে পারবেন। আমি তাকে বলেছি, তিনি এগুলো ঠিক করবেন।
সনদের সার্বিক মানের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুরাদ হোসেন বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে সনদের কাগজ ও সার্বিক মানের বিষয়ে একটি সভা করে আলোচনা করেছি। আমরা চেষ্টা করছি মান বৃদ্ধির জন্য। ডিজাইন ও বানান ভুলের জন্য আমরা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরকে নির্দেশনা দিয়েছি। তারা যথাযথ উদ্যোগ নিবে বলে আশা করছি।”