ক্যাম্পাস

বিনা উদ্ভাবিত বোরো ধানের বীজ বিতরণ ও চাষকৌশল প্রশিক্ষণ

কিশোরগঞ্জের সদর উপজেলায় ‘বিনা উদ্ভাবিত সম্প্রসারণযোগ্য বোরো ধানের জাতসমূহের চাষাবাদ, বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ কলাকৌশল’ শীর্ষক কৃষক ও কৃষাণী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। কর্মশালাটি যৌথভাবে আয়োজন করে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) এবং কিশোরগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। 

কিশোরগঞ্জের সদরের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোতালেব হোসেনের সভাপতিত্বে এবং বিনার ফলিত গবেষণা ও সম্প্রসারণ বিভাগের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তাহমিনা ইয়াসমিনের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ। 

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিনার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মাহবুবুর রহমান খান এবং ড. মোহাম্মদ নুরুন-নবী মজুমদার।

এ সময় ড. মোহাম্মদ নুরুন-নবী মজুমদার বলেন, "বিনা শুধু ধানের উন্নত জাত উদ্ভাবনই নয়, সরিষা ও অন্যান্য ফসলের ক্ষেত্রেও সাফল্য অর্জন করেছে। আমাদের উদ্ভাবনগুলো কৃষকের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম।"

ড. মাহবুবুর রহমান খান বলেন, “কৃষি উন্নয়নের জন্য গবেষণা ও মাঠ পর্যায়ে তার বাস্তবায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কৃষকদের মধ্যে বিনা উদ্ভাবিত জাতগুলো ছড়িয়ে দিতে আমরা নিয়মিত কাজ করছি। এ কর্মশালা তারই একটি অংশ।”

প্রধান অতিথি আবুল কালাম আজাদ বলেন, “বাংলাদেশের কৃষি দিনদিন আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। বিনার উদ্ভাবিত উন্নতজাতের ধান কৃষি উৎপাদনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে। এ ধানের জাত চাষাবাদ করে কৃষকরা বেশি ফলন পাবেন এবং অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন। কৃষক পর্যায়ে এসব জাতের সঠিক চাষাবাদ ও বীজ সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে প্রশিক্ষণের গুরুত্ব অপরিসীম।”

কর্মশালাটি দুটি সেশনে অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম পর্বে ছিল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, আর দ্বিতীয় পর্বে কারিগরি প্রশিক্ষণ। প্রশিক্ষণে কৃষকদের বিনা ধান ২৫ এর বীজ চাষাবাদ, উৎপাদন এবং সংরক্ষণের আধুনিক কলাকৌশল শেখানো হয়। প্রশিক্ষণ শেষে অংশগ্রহণকারী কৃষকদের মাঝে বোরো মৌসুমের উন্নত জাতের ‘বিনা ধান ২৫’ এর বীজ বিতরণ করা হয়।

কিশোরগঞ্জ সদরের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোতালেব হোসেন বলেন, “বিনা ধান ২৫ এর মতো উন্নত জাতের ধান চাষ করলে কৃষকদের উৎপাদন খরচ কমবে এবং উৎপাদন বাড়বে। এ জাতটি বিশেষত আমাদের অঞ্চলের জন্য অত্যন্ত উপযোগী।”

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) এ পর্যন্ত বোরো ও আমন ধানের মোট ২৭টি জাত উদ্ভাবন করেছে। এছাড়া বিনা সরিষাসহ অন্যান্য উন্নত ফসলের জাত উদ্ভাবন করে কৃষি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।