প্রতিদিন হাজারো শিক্ষার্থীর পদচারণায় মুখরিত হয় জেলার সবচেয়ে প্রাচীন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান নোয়াখালী সরকারি কলেজ। এখান থেকে শিক্ষার্থীরা কৃতিত্বের সঙ্গে বের হয়ে দেশের বিভিন্ন সেক্টরে সাফল্যের স্বাক্ষর রেখে চলেছেন।
কলেজের সামনের একটি স্থানকে ভাগাড় বানিয়েছে পৌরসভা। শহরের ময়লা-আবর্জনা জোগাড় করে এখানে এনে স্তূপ করা হয়। এর দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। নাক চেপে চলাচল করতে হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সবার।
সরেজমিনে দেখা যায়, নোয়াখালী পৌরসভার নির্দিষ্ট কোনো ময়লা ফেলার স্থান (ডাম্পিং স্টেশন) নেই। এতে ২ নম্বর ওয়ার্ডের লক্ষীনারায়ণপুরের নোয়াখালী সরকারি কলেজের মসজিদ ও ছাত্রী হোস্টেলের মধ্যবর্তী রাস্তার পাশে বাসা-বাড়ি ও দোকানপাটের ময়লা-আবর্জনা নিয়মিত ফেলায় স্থানটি ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।
রাস্তার উপর ও পাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ময়লা আবর্জনার পঁচা দুর্গন্ধ কলেজ এলাকার পরিবেশকে দূষিত করছে। ময়লা থেকে আসা মাছি আর দুর্বিষহ দুর্গন্ধে নাকাল অবস্থা শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও পথচারীদের। কলেজ মসজিদে নামাজ পড়তে আসা মুসল্লি এবং ছাত্রী হোস্টেলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন।
চিকিৎসকরা বলছেন, হোস্টের পাশে থাকা এ ময়লার স্তুপ শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধ পরিবেশকে যেভাবে দুষিত করে, তেমনি দুর্গন্ধ মানুষের নাক দিয়ে প্রবেশ করে পাকস্থলীতে গিয়ে বিভিন্ন সংক্রামক রোগের সৃষ্টি করতে পারে। ফলে শিক্ষার্থীরা নানা রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। এমনকি তাদের সংক্রামক ব্যাধিও হতে পারে।
কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তার বলেন, “সপ্তাহে তিন থেকে চারদিন কলেজে আসতে হয়। কলেজে প্রবেশ করার সময় এ ময়লার স্তুপের দুর্গন্ধে পেটের নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে আসার উপক্রম হয়। কোনমতে নাকে কাপড় চেপে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে হয়। কলেজের সামনের রাস্তা থেকে ময়লার স্তুপটি সরিয়ে অন্য জায়গায় দ্রুত স্থানান্তর করার দাবি জানাচ্ছি।”
কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন বলেন, “এ ময়লার স্তুপটি কলেজের পরিবেশ নষ্ট করছে। এর জন্য আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা খুবই কষ্ট পাচ্ছেন। ময়লার ভাগাড়টি এখান থেকে উচ্ছেদ করে অন্য জনবসতিহীন এলাকায় স্থানান্তর করার জন্য পৌরসভাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পৌরসভা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। আমরা আবার যোগাযোগ করবো পৌরসভার সঙ্গে।”
নোয়াখালী পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা শ্যামল দত্ত বলেন, “কেউ ময়লা ফেলার জন্য জায়গা দিতে চায় না। তাই বাধ্য হয়ে এখানে ময়লা ফেলার জায়গা করা হয়। কিন্তু আমরা প্রায় সময়ই ময়লাগুলো নিয়ে আসি। তারপরেও লোকবল সংকট ও লজিস্টিক সাপোর্টের অভাবে মাঝেমাঝে আনা হয় না। আমরা চেষ্টা করবো প্রতিদিনের ময়লা প্রতিদিন নিয়ে আসতে।”
তিনি বলেন, “আর কলেজ প্রশাসন ও স্থানীয়রা ময়লা ফেলার জন্য উপযুক্ত একটি স্থান খুঁজে দিতে পারলে আমরা সেখানে ডাম্পিং স্টেশনটি স্থানান্তর করে নেব।”