ক্যাম্পাস

২৪ ঘণ্টার মধ্যে সহ-সমন্বয়ক খালেদের সন্ধান দাবি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের খাঁটি খালেদ হাসানের সন্ধানের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চারদিন ধরে নিখোঁজ এ সমন্বয়কের সন্ধান চেয়েছেন তারা। 

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টায় ‘সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের শিক্ষার্থীবৃন্দ’ এর ব্যানারে আয়োজিত বিক্ষোভটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল থেকে ভিসি চত্বর হয়ে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশ করে। সেখান থেকে পুনরায় বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ভিসি চত্বর হয়ে জহুরুল হক হলে গিয়ে শেষ হয়।

বিক্ষোভ মিছিলে তারা ‘বিপ্লবীদের কিছু হলে, জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’, ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘ফ্যাসিস্টের দালালেরা, হুশিয়ার সাবধান’, ‘আমার ভাই গুম কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘খালেদ হাসান গুম কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে থাকেন।

রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জহুরুল হক হলের প্রভোস্ট, আবাসিক শিক্ষক ও সাধারণ ছাত্ররা বক্তব্য দেন।

এ সময় শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে সাইফুল ইসলাম বলেন, “খালেদ জুলাই আন্দোলনের একজন অকুতোভয় সৈনিক। তিনি আজ চারদিন ধরে নিখোঁজ। আমরা পুলিশ, গোয়েন্দাসহ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু তারা কোন খবর আমাদেরকে দিতে পারছে না।”

শুভ আহমেদ বলেন, “আজ খালেদ নিখোঁজ হয়েছে। কাল আমিও নিখোঁজ হতে পারি। আমাদের নিরাপত্তা দিতে পারছে না স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।”

আজিজ বলেন, “২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার আমার ভাইকে গুম করেছিল। যার কারণে আমার মা স্ট্রোক করেছিল ৪০ বছর বয়সে। তিনি ভালোভাবে কোন কাজই করতে পারেন না। জানি না খালিদের মায়ের এখন কী অবস্থা!”

জহুরুল হক হলের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “এই খালিদ হাসান সেই খালিদ হাসান, যিনি ১৫ জুলাই ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার, ১৭ জুলাই হল থেকে ছাত্রলীগ তাড়াতে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন। ৫ আগস্টের পরে বিপ্লবের ধারা অব্যহত রাখতে বিভিন্ন কর্মসূচিতে তৎপর ছিলেন।”

জহুরুল হলের আবাসিক শিক্ষক জামিল শরিফ বলেন, “আমরা সবাই খুবই শঙ্কিত। আমি প্রশাসনের নিকট বলব তাকে দ্রুত আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেবেন।”

জহুরুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ ড. ফারুক সরকার বলেন, “আমার শিক্ষার্থীরা যেসব দাবি জানিয়েছে, তার সবগুলোর সঙ্গে আমি একমত পোষণ করেছি। খালেদের সঙ্গে ক্লোজলি মেশার সুযোগ পেয়েছি। তার মধ্যে অনেক পোটেনশিয়ালিটি ছিল। আমি এ ব্যাপারে জানার সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।”

তিনি বলেন, “নিখোঁজের বিষয়টি শুধু খালেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি পুরো দেশের নাগরিকের নিরাপত্তার বিষয়। আমি প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য সংশ্লিষ্টদের বলতে চাই, আমরা খালেদকে সুস্থ, সবল হিসেবে ফেরত পেতে চাই।”