ক্যাম্পাস

ইবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষিকার অসদাচরণের অভিযোগ 

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) জিওগ্রাফী অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক বিপুল রায়ের বিরুদ্ধে নারী সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার (১১ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসানের কাছে অসদাচরণের প্রতিকার চেয়ে অভিযোগপত্র দেন ভুক্তভোগী।

ভুক্তভোগী জিওগ্রাফী অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ইফফাত আরা।

অভিযোগে ভুক্তভোগী ইফফাত আরা বলেন, “গত বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে বিভাগীয় সভাপতির রুমে সব শিক্ষকের উপস্থিতিতে একাডেমিক কমিটির একজন সদস্য হিসেবে আমি সভাপতি বিপুল রায়ের কাছে জানতে চাই, তিনি বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির সভা ও সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কেন উপাচার্যের কাছে ব্যক্তিগতভাবে গেস্ট টিচারের নাম প্রস্তাব করেন এবং এভাবে তিনি করতে পারেন কিনা?”

তিনি বলেন, “এ প্রশ্ন করায় তিনি মাত্রাতিরিক্ত রাগন্বিত হয়ে জবাব দেন, ‘আমি অত নিয়ম মানতে পারবো না।’ এরপর তিনি ক্রমাগত উচ্চস্বরে ধমকের সুরে কথা বলে আমাকে অপমান করতে থাকেন। আমাকে চিৎকার করে বার বার বলতে থাকেন, ‘আমাকে নিয়ম শেখাতে আসবেন না। আপনি সব কিছুতে নিয়ম দেখান। আপনিও তো নিয়ম মানেন না, সব ক্লাস নেন না।’ আমি তখন বলি, ‘আমি কোন অনিয়ম করে থাকলে প্রশাসনকে জানান বা কি অনিয়ম করেছি দেখান।’ তখন তিনি আমাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে কথা বলা শুরু করেন।”

তিনি আরও বলেন, “বাকি দুই সহকর্মী তার এ অসদাচারণ থেকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি ক্রমাগত আক্রমণাত্মকভাবে উচ্চস্বরে অশোভন আচরণ করতে থাকেন। আমি কর্মক্ষেত্রে বিভাগীয় সভাপতির এমন অসদাচরণের ফলে মানসিকভাবে প্রচণ্ড বিপর্যস্ত ও ভীত।”

এ ঘটনা বিভাগের সভাপতির রুমে ঘটেছে। যা বিভাগের সিসি ফুটেজ চেক করলে খতিয়ে দেখা সম্ভব বলেও তিনি অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন।

এ বিষয়ে জানাতে চাইলে সহকারী অধ্যাপক ইফফাত আরা বলেন, “আমি লিখিত অভিযোগে আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছি। তাছাড়া নারী শিক্ষকদের জন্য কর্মক্ষেত্রে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতের জন্য প্রশাসনের দৃষ্টিপাত কামনা করছি।”

তবে অভিযুক্ত সহকারী অধ্যাপক বিপুল রায় বলেন, “তিনি কেন এসব অভিযোগ দিয়েছেন, আমি জানি না। যেহেতু এ বিষয়ের সঙ্গে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই এবং এসব বিষয় সম্পর্কে অবগতও না। সেহেতু এ বিষয়ে আমার কোন মন্তব্য নেই। আর এমন কোন অসদাচরণের ঘটনা কখনো ঘটেনি।”

রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, “একটি অভিযোগ পেয়েছি। আমি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে এটি পাঠিয়ে দিয়েছি।”

সম্প্রতি জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের নাম পরিবর্তন নিয়ে সন্ত্রাসী কাজে জড়ানোর অভিযোগ উঠেছে একাধিক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। তাদের কয়েকজন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এসব সন্ত্রাসী কার্যক্রমে মদদ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বিপুল রায়ের বিরুদ্ধে।

এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, আবেদনের যোগ্যতা না থাকলেও ‘অদৃশ্য শক্তির বলে’ তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়েছেন এবং তার পিএইচডি সুপারভাইজারের বিরুদ্ধেও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ রয়েছে।