সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসের প্রভাবে ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোক্তাদের মধ্যে মারাত্মকভাবে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে।
দেশের বিজনেস কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠান লাইট ক্যাসল পার্টনার্সের (এলসিপি) এক সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
চলতি বছরের শুরু থেকেই করোনার সবচেয়ে নেতিবাচক প্রভাব আসে বেসরকারিখাতে। ফলে ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত উদ্যোক্তাদের ব্যবসায় আস্থা সূচক মাইনাস ১৯ দশমিক ২৭ পয়েন্টে নেমে আসে।
অথচ ২০১৮ সালে একই সময়ে বেসরকারিখাতে এই সূচক ছিল প্লাস ৪৩ পয়েন্ট। বিশেষত এই সময়ে চীন থেকে পোশাক শিল্পসহ রপ্তানিমুখী বিভিন্নখাতের পণ্য উৎপাদন প্রক্রিয়ায় চাহিদা অনুযায়ী কাঁচামাল সরবরাহ কমে যাওয়ায় উদ্যোক্তাদের মধ্যে এই আস্থাহীনতা সৃষ্টি হয়।
‘বিজনেস কনফিডেন্স ইনডেক্স-২০১৯-২০’ (বিসিআই) শিরোনামে বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে এই রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। গত মার্চ থেকে এপ্রিল পর্যন্ত দেশের ৫৯টি বিভিন্ন ব্যবসা ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাক্ষাৱকারের ভিত্তিতে এই মানদণ্ড তৈরি করা হয়।
এলসিপি আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহমেদ, পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাশরুর রিয়াজ, মেট্টোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির (এমএসসিআই) সভাপতি নিহাদ কবির, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সভাপতি আসিফ ইব্রাহিম প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এলসিপি'র সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিজন ইসলাম।
মূল প্রবন্ধে লাইট ক্যাসল পার্টনার্সের পরিচালক জাহিদুল আমিন বলেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে চলমান অর্থনৈতিক ধাক্কায় সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে জিডিপি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে।
আলোচনায় নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে আমাদের এখন অর্থনীতির নির্দিষ্ট খাতের পরিবর্তে প্রতিটি খাতকে গুরুত্বের সঙ্গে চিন্তা করার সময় এসেছে।
সমীক্ষায় সাক্ষাৱকার দেওয়াদের মধ্যে ৮০ শতাংশই মনে করেন, করোনার প্রভাবে গত ছয় মাসে দেশের অর্থনীতি সবচেয়ে বেশি ধস নামে। ৪০ শতাংশ ধারণা করছেন, এর প্রভাবে পোশাক, টেক্সটাইল, চামড়া ও চামড়াজাত শিল্পে সবচেয়ে বেশি হারে শ্রমিক ছাঁটাই এর সম্ভাবনা রয়েছে।
আলোচনায় এই সংকট কাটিয়ে উঠতে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করা হয়। এগুলো হচ্ছে- ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনা, বেসরকারিখাতে ঋণপ্রবাহ, সরকারি সঞ্চয় স্কিমে সুদের হার কমে যাওয়া ইত্যাদি।
ঢাকা/হাসান/জেডআর