বাংলাদেশ বিনিয়োগকারীদের জন্য অপেক্ষা করছে। আসুন বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুন। এখানে বিনিয়োগ করে উচ্চ হারে রিটার্নের নিশ্চয়তা রয়েছে বিনিয়োগকারীদের। বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত শ্রমশক্তি আমাদের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিকে এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করছে। বাংলাদেশে ব্যবসার সুন্দর পরিবেশ রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
সোমবার (২ আগস্ট) বিশ্বের তথ্য প্রযুক্তির রাজধানী খ্যাত ক্যালিফোর্নিয়ার সান ফ্রান্সিসকোর স্থানীয় সময় বিকাল সাড়ে ৫টায় (বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার, ৩ আগস্ট সকাল সাড়ে ৬টা) হায়াত রিজেন্সি সান্তা ক্লারা হোটেলের বলরুমে রোড শো’র উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় রোড শোতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রয়েছে, গতিশীল অর্থনীতি, বিশেষ করে শেয়ারবাজার গতিশীল। তাছাড়া বাংলাদেশে দিন দিন রিজার্ভে রেকর্ড গড়ছে। যা দিয়ে ১০ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের আর্থিক খাতে শক্তিশালী গভর্নেন্স রয়েছে। বিশেষ করে শেয়ার মার্কেটে শক্তিশালী গভর্নেন্স পরিপালন করা হয়। শেয়ার মার্কেটের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে নিয়মিত মনিটরিং করা হয়। তাদের পারফর্মেন্সের খোঁজখবর নিয়মিত রাখা হয়। এর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়। বাংলাদেশে বিনিয়োগকারীদের বেশ সুরক্ষা দেওয়া হয়। নিটা অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে প্রবাসী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সহজে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারে। এই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কোনো ধরনের অনুমোদন ছাড়াই খুব সহজে প্রবাসী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগের অর্থ ও লভ্যাংশ ফেরত আনতে পারে।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, বিডা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সব ধরনের সহযোগিতা করে থাকেন। বেপজা বিনিয়োগকারীদের জন্য প্লট ও অন্যান্য বিষয়ে তদারকি করেন। সুতরাং বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য খুবই ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ বিরাজ করছে।
বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে নিশ্চিত রিটার্ন পাওয়া সম্ভব উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুন্দর পরিবেশ রয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের শেয়ার মার্কেটে বিগত দিনে বেশ সংস্কার করা হয়েছে। ফলে দিন দিন শেয়ার মার্কেট নতুন উচ্চতার দিকে যাচ্ছে। সূচক, লেনদেন, বাজার মূলধনে নতুন রেকর্ড গড়ছে। ফলে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে উচ্চ হারে রিটার্নের নিশ্চয়তা রয়েছে।
তিনি বলেন, হংকং ভিত্তিক এশিয়ান ফন্ট্রিয়ার ক্যাপিটাল ফান্ডের মতে, বাংলাদেশের শেয়ারবাজার করোনাকালে ২০২০ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে এশিয়ার মধ্যে সেরা পারফর্ম করেছে। ঢাকার স্টক এক্সচেঞ্জে ডাবল ডিজিট প্রবৃদ্ধি হয়েছে। লেনদেন, সূচক এবং বাজার মূলধন বেড়ে দিন দিন রেকর্ড গড়ছে।
বিএসইসি চেয়ারম্যান আরও বলেন, বাংলাদেশের শেয়ার মার্কেট আধুনিকতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে স্মল ক্যাপ বোর্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট বোর্ড, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল, স্টার্ট আপ কোম্পানির জন্য তহবিল সংগ্রহের সুযোগ রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের ই-কমার্স মার্কেট দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে। গ্লোবাল রেঙ্ক ৬ এ অবস্থান করছে বাংলাদেশের ই কমার্স মার্কেট।
রোড শোর শুরুতে সান্তা ক্লারার মেয়র লিসা এম. গিলমোর সালমান এফ রহমান ও অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে মেয়রাল সার্টিফিকেট প্রদান করেন (মেয়রের পক্ষ থেকে স্বীকৃতি সনদ)। তারা মেয়রকে নকশি কাঁথা উপহার দেন।
পাশাপাশি মেয়র বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্রেস্ট দেন। ক্রেস্টটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দিতে সালমান এফ রহমানের হাতে সেটি তুলে দেন তিনি।
সান ফ্রান্সিসকোর রোড শোতে আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. নজরুল ইসলামসহ সরকারি বেসরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যোগ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: সান ফ্রান্সিসকোতে চতুর্থ পর্বের রোড শো শুরু