অর্থনীতি

যাদের মার্জিন ঋণ নাই, তাদের টেনশন নাই: আল আমিন

পুঁজিবাজারে যেসব বিনিয়োগকারী মার্জিন ঋণ ছাড়াই বিনিয়োগ করেছেন, তাদের শেয়ার নিয়ে শঙ্কিত না হবার পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আল-আমিন। পুঁজিবাজারের এ বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এ মুহূর্তে যেসব বিনিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণ নাই তাদের বাজার নিয়ে টেনশন করার কোনো কারণ নাই। বাজার যেদিকে যায়, আপনি শুধু নিরব দর্শক হিসেবেই দেখবেন। কারণ বাজার কারেকশন ফ্লোতে থাকলে তা এক সময় রিকভার হয়ে যাবে।

ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে পুঁজিবাজার থেকে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করে নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জে কমিশন (বিএসইসি)। এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের কৌশল কেমন হতে পারে সে বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া একটি ভিডিও বার্তায় তিনি এ পরামর্শ দিয়েছেন।

মো. আল-আমিন বলেন, রোববার (২১ জানুয়ারি) থেকে বিনিয়োগকারীদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের কৌশলটা যেমন হতে পারে-ধরুন আপনি সামগ্রিক বাজার নিয়ে যদি খুব বেশি টেনশন করেন, তাহলে একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। যে স্টকটাতে (শেয়ার) বিনিয়োগ আপনার আছে, শুধুমাত্র সেই বিষয়টা নিয়ে কনসার্ন হবেন। কারণ সামগ্রিক বাজার দেখতে গেলে অনেকগুলো বিষয় আপনার মধ্যে একটা চাপ অনুভব হতে পারে। সেক্ষেত্রে যে কাজটা করতে পারেন-আপনি যে স্টকে বিনিয়োগ করে আছেন, সেই স্টকটা কোন দিকে মুভ করছে সেটেই ইম্পর্টেন্ট। কারণ ইনডেক্স যতই প্লাস বা মাইনাস হোক আপনার স্টকটা যদি সেভাবে মুভমেন্ট না হয় তাহলে কিন্তু আপনার কিছু অসে যায় না। তো সে কারণে যাদের মার্জিন ঋণ নেই তারা কিন্তু আসলে কোনভাবেই শেয়ার নিয়ে শঙ্কিত হবেন না। কারণটা হচ্ছে- বাজার যদি একটা কারেকশন ফ্লোতে থাকেও এক সময় না এক সময় তা রিকভার হয়ে যাবে। কিন্তু যাদের মার্জিন ঋণ আছে তারা একটু এক্সট্রা সতর্কতা হিসেবে কিছু ফান্ড অ্যারেঞ্জমেন্টের ব্যবস্থা রাখবেন, যদি সেরকম ভাবে শেয়ার কারেশন হয়।

পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, আপনারা একটি বিষয় লজিক্যালি বিশ্লেষণ করে দেখতে পারেন, সেটি হলো-দেড় বছর ফ্লোর প্রাইসের আওতায় পড়ে থাকা যেসব কোম্পানির শেয়ারে ক্রেতা আসেনি বা ১০ শতাংশ ডাউন সার্কিটে উল্লেখযোগ্য শেয়ার লেনদেন হয়নি, তাহলে হঠাৎ করেই ওই কোম্পানির শেয়ারে ক্রেতা চলে আসবে বিষয়টা কিন্তু সেরকম নয়। তো আপনাকে আগে একটু সময় দিতে হবে। কোন লেভেলে ক্রেতা আসে, আসার পর কেমন ভলিউম হয়, এতে বাজার কোন দিকে টার্ন করে-এমন অনেকগুলো বিষয়কে বিবেচনা রেখেই কিন্তু বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে যেসব বিনিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণ নাই তাদের বাজার নিয়ে টেনশন করার কোনো কারণ নাই। বাজার যেদিকে যায়, আপনি শুধু নিরব দর্শক হিসেবেই দেখবেন। আর যদি আপনার মার্জিন ঋণ নেওয়া থাকে তাহলে অল্টারনেটিভ ফাইন্যান্সের ব্যাপারে একটু চিন্তা করবেন। যদি কোনো কারণে আপনার শেয়ার ট্রিগার সেলের আওতায় চলে আসে, সেজন্য ব্যাকআপ প্ল্যান রাখতে হবে। সবমিলিয়ে আমরার মনে হয়, আপনারা নিজ নিজ স্টকে কনসেনট্রেট করেন। এ মুহূর্তে ওভারঅল মার্কেট আপনার না বিশ্লেষণ করলেও চলবে।

প্রসঙ্গত, ফ্লোর প্রাইস (শেয়ারের সর্বনিম্ন সীমা) আরোপের প্রায় দেড় বছর পর গত বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) এক আদেশে তা তুলে দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ফলে রোববার (২১ জানুয়ারি) থেকে ৩৫টি ছাড়া বাকি সকল কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটগুলো ফ্লোর প্রাইস ছাড়াই লেনদেন শুরু করে। লেনদেন শুরুর ৭ মিনিটের মধ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ডিএসইএক্স সূচক ২১৪ পয়েন্ট পড়ে অবস্থান নেয় ৬১২২ পয়েন্টে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূচকের পতনমুখী প্রবণতা কমতে থাকে।