অর্থনীতি

পারিবারিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ২০০ বছর উদযাপন 

নিরাপদ খাবার প্যাকেজিং অ্যাপ্লিকেশন ও লেবেলের জন্য প্রিন্টিং কালি ও কোটিংয়ের শীর্ষস্থানীয় বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান সিগওয়ার্ক চলতি বছর নতুন এক মাইলফলক স্পর্শ করেছে। ১৮২৪ সালে পারিবারিক ব্যবসাটির যাত্রা শুরু হয়, দীর্ঘ বিবর্তন ও অসংখ্য উদ্ভাবনের পর যা ২০০ বছরের প্রতিষ্ঠান সিগওয়ার্কে পরিণত হয়েছে।

সিগওয়ার্কের সিইও ড. নিকোলাস উইডমান জানান, সিগওয়ার্ক গঠনের পেছনে যে পারিবারিক ব্যবসাটি আছে, তার ইতিহাস বেশ চমকপ্রদ।

তিনি বলেন, শুরু থেকেই আমাদের কোম্পানি ট্রেন্ড এবং ক্রমাগত পরিবর্তনের প্রাসঙ্গিকতার বিষয়টি বুঝতে পারে। এর ফলে কোম্পানিটি প্রতিটি যুগের চ্যালেঞ্জের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে এবং সঠিক পথে চলার প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে সক্ষম। 

১৮২৪ সালে উৎপাদিত পণ্যের খুচরা বিক্রেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় এই জার্মান পারিবারিক মালিকানাধীন কোম্পানিটি। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই কোম্পানি প্রিন্টিং ব্যবসায় প্রবেশ করে। জার্মানির প্রথম দিককার একটি ইলাস্ট্রেশন রোটোগ্যাভিউর প্রিন্ট শপের মাধ্যমে ক্যালিকো (সুতির কাপড়) প্রিন্ট শপ খোলা থেকে শুরু করে ইউরোপের বৃহত্তম সম্পূর্ণ-স্বয়ংক্রিয় কালি উৎপাদনকারী কারখানা স্থাপন করা পর্যন্ত ২০০ বছরে কোম্পানিটি নিজেদের প্রিন্টিং দক্ষতার উন্নতি ঘটিয়েছে। ১৯১১ সালে স্থাপিত হয় ‘সিগওয়ার্ক কেমিস্ক ল্যাবরেটোরিয়াম জিএমবিএইচ’, যে কোম্পানির বিশেষত্ব ছিল গ্রাফিকস শিল্পের জন্য গ্র্যাভিউর কালি এবং অন্যান্য রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদন করা। এর মাধ্যমেই আজকে সিগওয়ার্ক হিসেবে পরিচিত কোম্পানির ভিত্তি স্থাপিত হয়।

সিগওয়ার্কের ষষ্ঠ প্রজন্মের মালিক এবং সুপারভাইজরি বোর্ডের চেয়ারম্যান আলফ্রেড কেলার বলেন, ‘টেক্সটাইল প্রিন্টিং থেকে শুরু করে পাবলিকেশন গ্র্যাভিউর এবং সবশেষে প্যাকেজিং প্রিন্টিংয়ে যাত্রার মাধ্যমে আমরা ক্রমাগত উৎপাদনের আধুনিকীকরণ ও প্রিন্টিং প্রযুক্তির উদ্ভাবন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। এভাবে আমাদের পারিবারিক ব্যবসাটি সময়ের চেয়ে এগিয়ে নতুন ট্রেন্ডের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে এবং প্রয়োজনীয় উদ্ভাবন দিয়ে প্রিন্টিং শিল্পকে প্রভাবিত করতে সফল হয়েছে।’ 

পারিবারিক ব্যবসা হিসেবে এই কোম্পানির যাত্রা শুরু হয়। আর এতদিন পরে এসেও কোম্পানির করপোরেট সংস্কৃতি তার এই মূল ব্যাপারটি দ্বারা প্রভাবিত।  দায়িত্ব, মুক্ত মন ও দূরদর্শিতা মতো মূল্যবোধগুলোকে এই প্রতিষ্ঠান এখনো সযত্নে লালন করছে।

১৮৪৩ সালে কোম্পানির ইন-হাউজ হেলথ ইন্স্যুরেন্স স্কিম প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে পৃথিবীজুড়ে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের আর্থিক সহায়তা ও সামাজিক প্রকল্প পরিচালনা—পরিবারটির সামাজিক দায়বদ্ধতা সবসময়ই এই কোম্পানির প্রধান মূল্যবোধের অংশ হিসেবে রয়েছে।  কেলার বলেন, ‘আমরা যা কিছু করি তার পেছনে চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করে আমাদের পরিবর্তন ঘটানো ও ইতিবাচক প্রভাব রাখার ইচ্ছা ও আবেগ।’ 

‘আর যখন আজকের সিগওয়ার্কারদের মধ্যে আমি এই আবেগ দেখতে পাই, আমি আমাদের কোম্পানি নিয়ে গর্ব অনুভব করি। পৃথিবী জোড়া প্রায় ৫,০০০ কর্মচারীর সাথে আমাদের ২০০ বছরের যাত্রা উদযাপন করার জন্য আমি মুখিয়ে আছি,’ বলেন কেলার। 

প্রায় ৩০ বছর ধরে আলফ্রেড কেলার এই ষষ্ঠ প্রজন্মের পারিবারিক ব্যবসার মালিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। উত্তরাধিকার সূত্রে এই ব্যবসা সপ্তম প্রজন্ম ও তার পরেও পারিবারিক মালিকানার অধীনেই থাকবে।