চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছর শেষে বাংলাদেশে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ৬, যা ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ছিল ৫ দশমিক ৮। আগামী ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৫.৭ শতাংশের পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
সংস্থাটি বলছে, জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে বছর শেষে দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকবে বাংলাদেশ। ভারতের পরেই সর্বোচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট বা বাংলাদেশ উন্নয়ন হালনাগাদ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ওই প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে বিশ্বব্যাংক।
বিশ্বব্যাংক জানায়, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে ভারত। এর পরেই জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হারের দেশ হবে বাংলাদেশ। অর্থবছর শেষে বাংলাদেশ ৫.৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে। ভুটান ৪.৯ শতাংশ, মালদ্বীপ ৪.৭ শতাংশ, নেপাল ৩.৩ শতাংশ, শ্রীলঙ্কা ২.২ শতাংশ এবং পাকিস্তান ১.৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে। দক্ষিণ এশিয়ায় সামগ্রিকভাবে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন হবে বলে অনুমান করছে সংস্থাটি।
বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেছেন, সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি, সুদহার বৃদ্ধি, মুদ্রার বিনিময় হার, আর্থিক খাতে সংস্কার তথা বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি তুলে নেওয়াসহ অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ৭ শতাংশ হতে পারে।
আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ২০২৬ সাল নাগাদ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে কোনো বাধা দেখছে না বিশ্বব্যাংক।
আবদৌলায়ে সেক বলেন, বাংলাদেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ অর্থনীতির অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। আগামী দিনেও উচ্চ মূল্যস্ফীতির ধারা অব্যাহত থাকতে পারে।
তিনি জানান, এই অঞ্চলের দেশগুলোকে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য নীতি গ্রহণ করতে হবে। দক্ষিণ এশিয়ায় কর্মক্ষম বয়সের জনসংখ্যা বৃদ্ধি অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের অঞ্চলের তুলনায় বেশি। ২০০০ সাল থেকে কর্মজীবী জনসংখ্যার অংশ হ্রাস পাচ্ছে। অন্যান্য উদীয়মান উন্নয়নশীল অর্থনীতি অঞ্চলে ৭০ শতাংশের তুলনায় ২০২৩ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় কর্মসংস্থানের অনুপাত ছিল ৫৯ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়াই একমাত্র অঞ্চল যেখানে কর্ম বয়সী পুরুষদের হার গত দুই দশকে কমেছে এবং এই অঞ্চলে সবচেয়ে কম কর্মজীবী নারী রয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ায় বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ফ্রানজিস্কা ওনসর্গ এই প্রতিবেদনে জানান, দক্ষিণ এশিয়া তার জনশক্তিকে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হচ্ছে। এটি সুযোগ হাতছাড়া করার মতো। যদি এই অঞ্চল অন্যান্য উদীয়মান বাজার এবং উন্নয়নশীল অর্থনীতির মতো কর্মক্ষম বয়সের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ নিযুক্ত করে, তাহলে এর আউটপুট ১৬ শতাংশের বেশি হতে পারে।