অর্থনীতি

বিদেশে পোশাক শিল্পের প্রচারের আহ্বান এফবিসিসিআই’র

পরিবেশবান্ধব পোশাক কারাখানা প্রতিষ্ঠায় অন্যান্য দেশগুলোর কাছে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের (ইউএসজিবিসি) লিড স্বীকৃতি পাওয়া সেরা কারখানাগুলোর অধিকাংশই বাংলাদেশের। তৈরি পোশাক শিল্পের এই অনন্য অর্জনকে কাজে লাগিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে জোরালো প্রচার চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন এফবিসিসিআই’র সভাপতি মাহবুবুল আলম।

শনিবার (১ জুন) এফবিসিসিআই’র মতিঝিল কার্যালয়ে সংস্থাটির আরএমজি এবং নিটওয়্যার স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি। সভায় সভাপতিত্ব করেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান এবং টর্ক ফ্যাশনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন। কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এফবিসিসিআই‘র পরিচালক এবং বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান।

মাহবুবুল আলম বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের পর অন্যান্য শিল্পের মতো তৈরি পোশাক খাতকেও নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হবে। তবে, কম্প্লায়েন্সের দিক থেকে বাংলাদেশের তৈরী পোশাক খাত অনেক দূর এগিয়েছে। এই অগ্রগতিকে কাজে লাগিয়ে এ শিল্পকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। গতানুগতিক পণ্য উৎপাদনের বাইরে আমাদের নন-কটন গার্মেন্টসে মনযোগ দিতে হবে। নিজেদের সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে একটি গ্লোবাল ফ্যাশন ব্র্যান্ড দাঁড় করাতে হবে বলে।

এ সময় তৈরি পোশাক খাতের বিদ্যমান নানা চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, তৈরী পোশাক ও বস্ত্র শিল্পের জন্য নিরবচ্ছিন্ন এবং গুণগত জ্বালানি সরবরাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ইতিবাচক ফল মিলবে বলে আশা করছি।

সভায় ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, ‘বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের সিংহভাগ আসে তৈরী পোশাক খাত থেকে। ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নে আমাদের দ্রুত রপ্তানি বহুমুখীকরণে যেতে হবে। তৈরী পোশাক শিল্পেও পণ্য উন্নয়ন ও বৈচিত্র্যকরণের অনেক সুযোগ রয়েছে। ভ্যালু অ্যাডেড পণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধি, দক্ষ জনবল তৈরী এবং নতুন বাজার ধরতে আমাদের উদ্যোক্তাদের এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে।’ শিল্পের সমস্যাগুলো নিয়ে অংশীজনদের সুচিন্তিত মতামত আহ্বান করেন কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন।

এফবিসিসিআই‘র পরিচালক এবং বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান জানান, ২০৩০ সাল নাগাদ তৈরী পোশাক শিল্পের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ লক্ষ্য অর্জনে বন্দর ও লজিস্টিকস সক্ষমতা বৃদ্ধি, ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজের উন্নয়ন এবং পণ্যের স্থানীয় মূল্য সংযোজন বৃদ্ধিতে জোর দিতে হবে।

আলোচনায় অংশ নিয়ে তৈরী পোশাক শিল্পের উৎপাদন ব্যয় স্বাভাবিক রাখতে গুণগত ও নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি নিশ্চিতকরণ, কাস্টমস ও বন্ডের জটিলতা হ্রাস, অনৈতিক প্রতিযোগিতা রোধ, স্থানীয় গার্মেন্টস এক্সেসরিজ শিল্পের সুরক্ষা ও উন্নয়ন, পণ্য জাহাজীকরণে লিড-টাইম কমিয়ে আনা, পণ্যের ন্যূনতম ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণসহ বেশকিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেন কমিটির সদস্যরা।