ছাগলকাণ্ডে আলোচিত-সমালোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মো. মতিউর রহমানকে সোনালী ব্যাংকের বোর্ড থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী। রোববার (২৩ জুন) সোনালী ব্যাংকের বোর্ড সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী বলেন, সোনালী ব্যাংকের বোর্ড থেকে মতিউর রহমানকে সরিয়ে দেওয়া বিষয়টি সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে। কারণ উনার অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেওয়া, স্থগিত করা বা ক্যানসেল করা পুরোটাই সরকারের ব্যাপার। তিনি সরকারের প্রতিনিধি ছিলেন। সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশনা এসেছে, তাকে আর বোর্ডে রাখা হবে না, তিনি আর বোর্ডে উপস্থিত হবেন না। সরকারের পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্ত আমাদের জানানো হয়েছে। আমরা বিষয়টি বোর্ডের সব সদস্যদের জানিয়েছি।
মতিউর রহমানকে ২০২২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি তিন বছরের জন্য সোনালী ব্যাংকের পরিচালক নিয়োগ দেওয়ার সুপারিশ করে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। তখন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ছিলেন শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ। পুনর্নিয়োগ না পাওয়ায় তিনি গত মাসে অবসরে গেছেন।
এর আগে, রোববার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট মতিউর রহমানকে তার পদ থেকে সরিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মকিমা বেগমের স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়, কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট মো. মতিউর রহমানকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে। জনস্বার্থে এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
উল্লেখ্য, ঈদুল আজহার আগে ঢাকার সাদিক এগ্রো থেকে ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কিনতে গিয়ে আলোচনার জন্ম দেন মতিউর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাত। তবে শুরুতে ইফাতকে ছেলে হিসেবে অস্বীকার করেন মতিউর রহমান। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে বিভিন্ন আলোচনা, সমালোচনা ও খবর প্রকাশিত হতে থাকে। মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে রিসোর্ট, শুটিং স্পট, বাংলো বাড়ি, জমিসহ নামে-বেনামে সম্পত্তি নিয়ে গণমাধ্যমের খবরে আলোচনা শুরু হয়। আর এই আলোচনার মধ্যেই এনবিআর থেকে তাকে প্রত্যাহার করার আদেশ জারি করা হয়। একই সঙ্গে সোনালী ব্যাংকের পর্ষদ থেকে সরানো এবং দুর্নীতি দমন কমিশন তার দুর্নীতি অনুসন্ধানে টিম গঠন করেছে।