অর্থনীতি

বাংলাদেশে কার্যক্রমের ৭৫তম বর্ষপূর্তি উদযাপন কেয়ারের

বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনার ৭৫ বছর উদযাপন করেছে আন্তর্জাতিক মানবিক সাহায্য সংস্থা কেয়ার বাংলাদেশ। এ উপলক্ষে শনিবার কেয়ার বাংলাদেশ বিশেষ লোগো উন্মোচন করে। পাশাপাশি সকালে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির সমৃদ্ধ ইতিহাস, বর্তমান অবস্থা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন কেয়ার বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর রাম দাশ।

কেয়ার বাংলাদেশের পরিচালক কমিউনিকেশন টনি মাইকেলের পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনে বিগত ৭৫ বছরের ইতিহাসনির্ভর কেয়ার বাংলাদেশের কার্যক্রমভিত্তিক উপস্থাপনা করেন কান্ট্রি ডিরেক্টর রাম দাশ। তিনি বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে বর্তমান বাংলাদেশে কেয়ার ১৯৪৯ সালে যাত্রা শুরু করে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে কেয়ার বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এবং কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশ সরকারের বিশ্বস্ত উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। 

রাম দাশ বলেন, ‘গণমানুষের পাশে দাঁড়িয়ে শতাধিক দেশে কাজ করার ইতিহাস নিয়ে কেয়ার এ বছর বাংলাদেশে ৭৫ বছর পূর্ণ করেছে। বাংলাদেশের উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকারের বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে এই সুদীর্ঘ মাইলফলক ছোঁয়ার এই মাহেন্দ্রক্ষণটি আমরা সহোৎসাহে উদযাপন করছি।’ 

বিকেলে কেয়ার বাংলাদেশ কার্যালয়ে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। ৭৫ বছর পূর্তি উদযাপনের সূচনা উপলক্ষে কেয়ার বাংলাদেশ বিশেষ লোগো উন্মোচন করে। এ সময়, কেয়ার ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিশেল নান এই উদযাপনে অনলাইনে অংশগ্রহণ করেন এবং বাংলাদেশে তাঁর সকল সহকর্মীকে শুভেচ্ছা জানান। পরবর্তীতে কেয়ার বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কর্মকৌশল উপস্থাপনা, নতুন ব্র্যান্ড গাইডলাইন পরিচিতি এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সান্ধ্যকালীন উদযাপন অব্যাহত ছিল। 

কেয়ার বাংলাদেশ বর্তমানে একাধিক ক্ষেত্রে কাজ করছে, যেমন–স্বাস্থ্য ও পুষ্টি, নারী ও যুব ক্ষমতায়ন, হিউম্যানিটারিয়ান অ্যান্ড ক্লাইমেট অ্যাকশন এবং শিগগিরই খাদ্য ও কৃষি ব্যবস্থায়ও কাজ করার লক্ষ্য রয়েছে। কেয়ার বাংলাদেশের ২০৩০ দেশভিত্তিক কর্মকৌশল পরিকল্পনায় (কান্ট্রি প্রোগ্রাম স্ট্র্যাটেজি) মূলত চারটি প্রভাবক নির্ধারণ করা হয়েছে—লৈঙ্গিক সমতা (জেন্ডার ইকুয়ালিটি), স্থানীয় নেতৃত্ব (লোকালি লেড), বাজারভিত্তিক পন্থা (মার্কেট বেজড অ্যাপ্রোচ) এবং সহনশীলতা উন্নীতকরণ (রেজিলিয়েন্স বিল্ডিং), যার মাধ্যমে কেয়ার বাংলাদেশের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের ১৫ মিলিয়ন বা ১.৫ কোটি মানুষ, বিশেষ করে নারীর নেতৃত্ব এবং সহনশীল (রেজিলিয়েন্ট) জীবন নিশ্চিত করা। 

কেয়ার ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই করা একটি নেতৃস্থানীয় মানবিক সংস্থা। সংকটময় সময়ে জরুরি সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে কেয়ার-এর সাত দশকেরও বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে। তারা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগণ, বিশেষ করে নারীদের চাহিদার ওপর অগ্রাধিকার দেয়। ২০২২ অর্থবছরে কেয়ার ৬৯১টি প্রকল্পের মাধ্যমে বিশ্বের ৬৮টি দেশে কাজ করেছে এবং ২ কোটিরও (২৫.৪ মিলিয়ন) বেশি মানুষের কাছে পৌঁছেছে। ২০২৩ অর্থবছরে কেয়ার বাংলাদেশ ৪৮টিরও বেশি প্রকল্পের মাধ্যমে ৫৩ লাখ (৫.৩ মিলিয়ন) মানুষের কাছে পৌঁছেছে যেখানে ৬৪% ছিল নারী এবং ব্যাপ্তির দিক থেকে সকল কেয়ার দেশগুলোর মধ্যে কেয়ার বাংলাদেশ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবদানকারী হিসেবে স্থান পেয়েছে।