অর্থনীতি

‘নগদ’-এ প্রশাসক নিয়োগ 

বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এ প্রশাসক ও সহায়ক কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম অফিসের পরিচালক মুহম্মদ বদিউজ্জামান দিদারকে ‘নগদ’-এ এক বছরের জন্য প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।  

বুধবার (২১ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের হিউম্যান রিসোর্স ডিপার্টমেন্ট (এইচআরডি) থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রশাসককে সার্বিক সহায়তার জন্য নগদে আরও ছয় কর্মকর্তাকে নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তারা হলেন—বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্টের অতিরিক্ত পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান, যুগ্ম পরিচালক আনোয়ার উল্যাহ, পলাশ মন্ডল, আবু ছাদাত মোহাম্মদ ইয়াছিন, উপ-পরিচালক চয়ন বিশ্বাস ও মো. আইয়ুব খান।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এর যাত্রা শুরু হয় ২০১৯ সালের ২৬ মার্চে। গত জুনে দেশের প্রথম ডিজিটাল ব্যাংক হিসেবে চূড়ান্ত লাইসেন্স পায় নগদ। আইনে বিশেষ ছাড় দিয়ে ‘নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি’কে তফসিলি ব্যাংক হিসেবে তালিকাভুক্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক কোম্পানি আইনে একক ব্যক্তি, পরিবার বা কোম্পানির কোনো ব্যাংকে ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার ধারণে যে বিধিনিষেধ রয়েছে, তাতে ছাড় দেওয়া হয়েছে নগদকে।

এদিকে, চূড়ান্ত লাইসেন্স দেওয়ার দুই মাস পর নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের উদ্যোক্তা ও শেয়ারধারীদের তথ্য খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সম্প্রতি নগদের বিদেশি উদ্যোক্তাদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য চেয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চিঠিতে বলা হয়েছে, নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি’র উদ্যোক্তা শেয়ারধারীদের তথ্য যাচাই করা প্রয়োজন। নগদের পাঁচটি বিদেশি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান হলো—ব্লু হেভেন ভেঞ্চারস এলএলসি, অসিরিস ক্যাপিটাল পার্টনারস এলএলসি, জেন ফিনটেক এলএলসি, ফিনক্লুশন ভেঞ্চারস পিটিই লিমিটেড এবং ট্রপে টেকনোলজিস এলএলসি। চিঠিতে এই পাঁচটি বিদেশি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধনপত্র যুক্ত করা হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের তথ্যাদি যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে সংগ্রহ করে জমা দিতে বলা হয়।

মোবাইলে আর্থিক সেবায় (এমএফএস) বিকাশের পরই এখন নগদের অবস্থান। তবে, অভিযোগ রয়েছে, প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে চলেনি প্রতিষ্ঠানটি। ডাক বিভাগের সেবা বলা হলেও আদতে এতে সরকারের কোনো অংশীদারত্ব ছিল না। দফায় দফায় পরিবর্তন হয় নগদের মালিকানায়। প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় যুক্ত ছিলেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। যথাযথ গ্রাহক তথ্য যাচাই (কেওয়াইসি) ছাড়াই মুঠোফোন গ্রাহকদের নিজস্ব গ্রাহক বানিয়ে ফেলার সুযোগ পায় নগদ। এছাড়া, সরকারের সব ভাতা বিতরণে একচ্ছত্র সুবিধা পায় নগদ। ফলে, সরকারি ভাতা পেতে নগদের গ্রাহক হওয়া বাধ্যতামূলক হয়ে ওঠে। এই ভাতা বিতরণে নয়-ছয় হওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ‘নগদ’-এ প্রশাসক নিয়োগ দিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক।