অর্থনীতি

মূল্যস্ফীতির চাপের মধ্যেও ব্যাংকে বাড়ছে কোটি টাকার অ্যাকাউন্ট 

বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির চাপের মধ্যেও ব্যাংকগুলোতে কোটি টাকার অ্যাকাউন্টের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকে কোটি টাকার বেশি রয়েছে, এমন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ১ লাখ ১৮ হাজার ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২৪ সালের জুনভিত্তিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুন শেষে ব্যাংক খাতে মোট আমানতকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫ কোটি ৮৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫২৩টি। এসব অ্যাকাউন্টে জমা আছে ১৮ লাখ ৩৮ হাজার ৮৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে, এমন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সংখ্যা রয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৮৪টি। এসব অ্যাকাউন্টে জমা আছে ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৫৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ দেশের ব্যাংকিং খাতে মোট আমানতের ৪২ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ কোটি টাকার অ্যাকাউন্টধারীদের।  

চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ১ কোটি টাকার বেশি আমানতের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ছিল ১ লাখ ১৫ হাজার ৮৯০টি। এসব ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মোট জমা ছিল ৭ লাখ ৪০ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিন মাসের ব্যবধানে কোটিপতি অ্যাকাউন্ট বেড়েছে ২ হাজার ৮৯৪ টি। তার আগে গত বছরের (২০২৩ সাল) ডিসেম্বর পর্যন্ত এমন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১৬ হাজার ৯০৮ টি। মোট জমা ছিল ৭ লাখ ৪১ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেছেন, কোটি টাকার অ্যাকাউন্ট মানেই কোটিপতি ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে নয়। কারণ ব্যাংকে ১ কোটি টাকার বেশি অর্থ রাখার তালিকায় ব্যক্তি ছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। আবার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কতটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে, তার নির্দিষ্ট সীমা নেই। ফলে, এক প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির একাধিক অ্যাকাউন্টও রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার কোটি টাকার অ্যাকাউন্টও রয়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি আমানতকারী ছিলেন ৫ জন। ১৯৭৫ সালে তা ৪৭ জনে উন্নীত হয়। ১৯৮০ সালে কোটি টাকার অ্যাকাউন্ট ছিল ৯৮টি। কোটি টাকার অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ১৯৯০ সালে ৯৪৩টি, ১৯৯৬ সালে ২ হাজার ৫৯৪টি, ২০০১ সালে ৫ হাজার ১৬২টি, ২০০৬ সালে ৮ হাজার ৮৮৭টি এবং ২০০৮ সালে ১৯ হাজার ১৬৩টি ছিল। ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে কোটি টাকার অ্যাকাউন্টের সংখ্যা দাঁড়ায় ৯৩ হাজার ৮৯০টি। ২০২১ সালের ডিসেম্বর বেড়ে তা দাঁড়ায় ১ লাখ ১ হাজার ৯৭৬টিতে। ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সেই হিসাবের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৯ হাজার ৯৪৬টি। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে দাঁড়ায় ১ লাখ ১৬ হাজার ৯০৮টিতে এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালের জুনে সেই হিসাবের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৮৪টিতে।