অর্থনীতি

ব্যাংক লুটকারীরা যেন কোর্টে আসতে বাধ্য হন: বিএবি সভাপতি

যারা ব্যাংক থেকে টাকা লুট করে পালিয়ে গেছেন, তারা যেন কোর্টে আসতে বাধ্য হন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে এ দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) সভাপতি আব্দুল হাই সরকার। ব্যাংক লুটকারীদের প্রতিনিধি দিয়ে মামলা পরিচালনার সুযোগ বাতিলেরও দাবি জানিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ব্যাংক মালিকদের পক্ষ থেকে এসব দাবি জানান বিএবি সভাপতি।

সাক্ষাৎ শেষে আব্দুল হাই সরকার সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমানে আমাদের যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আছে, তারা কাজ করছে৷ বর্তমান অর্থ উপদেষ্টা যখন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ছিলেন, তখন আমি ঢাকা ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলাম৷ উনার সময় তো ব্যাংকগুলো কত সুন্দর চলেছে৷ স্মুথ ছিল৷ যখন থেকে সরকারের পক্ষ থেকে নানা ধরনের অন্যায় আদেশ করা হতো, সেগুলো মানতে গিয়েই তো ব্যাংকগুলো সমস্যায় পড়ে গেছে৷ শেষ মুহূর্তে এসে এই অবস্থায় দাঁড়িয়েছে এখন৷ আশা করি, বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে এ অবস্থান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারব৷ 

তিনি বলেন, যখন একটি ব্যাংক সমস্যায় পড়ে যায়, তখন ডিপোজিটররা সেই ব্যাংকে টাকা রাখতে চান না৷ তারা মনে করেন, এই ব্যাংকে টাকা রাখলে নষ্ট হবে৷ এই যে মানুষের বিশ্বাস, এটা গ্রো করতে সময় লাগবে৷ বর্তমান সরকার যেভাবে আমাদের সাপোর্ট দিচ্ছে এবং সুন্দর পলিসি দিচ্ছে, তাতে আমরা দ্রুত এ সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠতে পারব৷ 

বিএবির পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো প্রস্তাব ছিল কি না, জানতে চাইলে সংগঠনটির সভাপতি বলেন, আমাদের প্রস্তাব ছিল, যারা ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন, তারা যেন কোর্টে আসতে বাধ্য হন৷ অনেকেই ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন৷ পলাতকদের কোনো অধিকার নেই কোর্টে তাদের প্রতিনিধি পাঠানোর৷ এই সুযোগ তাদের দেওয়া উচিত না৷ তারা কানাডায় বসে থেকে দেশে কেস কনটেস্ট করার সুযোগ যেন না পান৷ এটা করতে হলে তারা দেশে এসে করুক৷ 

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা দিয়ে অন্য ব্যাংকগুলোকে বাঁচানো সম্ভব না৷ আমরা বলেছি, আন্তর্জাতিক ফাইন্যান্স কর্পোরেশন, আইএমএফ, এডিবি— এদের যদি একটা প্যাকেজ দেওয়া যায়, তাহলে এসব ব্যাংককে বাচাঁনোর সেরা মাধ্যম হবে৷ 

বিএবি সভাপতি আরও বলেন, ব্যাংকের মূল শক্তি ডিপোজিটর৷ যদি তারা টাকা না রাখেন, তাহলে ব্যাংক শেষ৷ তাহলে লোনও দেওয়া যাবে না৷ ব্যাংক বাঁচবে কীভাবে? টাকার সোর্স তো ডিপোজিটর৷ আমরা বোর্ডে বসতে পারি, কিন্তু আমাদের আর কত টাকা আছে? 

এভাবে ব্যাংক টেকাতে পারবেন কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রতিটি জিনিসেরই সমাধান আছে৷ ওই সমাধানটাই বের করার চেষ্টা করছি৷ আমরা সরকারের সাথে আলোচনা করেছি, যাতে সমস্যায় থাকা ব্যাংকগুলোকে সাহায্য করতে পারি৷ এস আলমসহ এ জাতীয় প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করার জন্য সাহায্য করা হয়েছে৷ সরকার থেকে যদি বলে, এস আলমের টাকা দিয়ে দাও, তাহলে টাকা দিতে তো বাধ্য৷