অর্থনীতি

পুঁজিবাজার নিয়ে বিএসইসি ও বিনিয়োগকারীদের ফলপ্রসূ বৈঠক

পুঁজিবাজারের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও বিকাশের জন্য বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। বিএসইসি’র সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের শীর্ষ সংগঠন ‘বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ’-এর বৈঠকে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। পুঁজিবাজার সংস্কারের চলমান প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের মতামত এবং অংশীজনদের সহযোগিতায় একটি স্বচ্ছ ও সমৃদ্ধ পুঁজিবাজার গড়ে তুলতে চায় বিএসইসি।

বুধবার (৯ অক্টোবর) বিএসএসি’র নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

বিএসইসি’র বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, আজ বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সঙ্গে বিএসইসি’র মতবিনিময় সভা হয়। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসি ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ শীর্ষ প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। একই সঙ্গে বিএসইসি’র মুখপাত্র এবং নির্বাহী পরিচালক, পরিচালকসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং বিএসইসি’র কর্মকর্তাবৃন্দ পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিক অবস্থা এবং বাজারের সংস্কারের বিষয়ে আলোচনা করেন।

বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন দাবি নিয়েও বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সভায় বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও বিকাশের জন্য তাদের সুপারিশ তুলে ধরেন। সর্বোপরি, কমিশনের সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের শীর্ষ সংগঠন ‘বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ’-এর বৈঠকে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়, বৈঠকে বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে পুঁজিবাজারের জেড ক্যাটাগরি সংশ্লিষ্ট নিয়মকানুনের সংস্কার এবং লভ্যাংশ না দেওয়াসহ নন-কমপ্লায়েন্সের ফলে জেড ক্যাটাগরিতে পাঠানোর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি ও তার কর্তাব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, সশরীরে কোম্পানির এজিএম করার নিয়ম পুনর্বহাল করা, বাজারে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ আনয়ন ও বিনিয়োগকারীবান্ধব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার মাধ্যমে বিদ্যমান পরিস্থিতি ও সময় বিবেচনায় সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করার সুপারিশ করা হয়। এছাড়াও পুঁজিবাজারে কোম্পানির স্পন্সর বা পরিচালকদের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের নিয়ম যথাযথ পরিপালন নিশ্চিতকরণ, শেয়ার বাই ব্যাক আইনের বিষয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ, বাংলাদেশে ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের মতো আরো প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি ও আনয়নের পদক্ষেপ গ্রহণ, বাজারে সিএমএসএফের ফান্ড থেকে বিনিয়োগ বা পুঁজির আনয়ন করার সুপারিশ তুলে ধরেন তারা। পাশাপাশি, বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে ইতিবাচক প্রচার নিশ্চিত করা এবং বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে বিএসইসির ইতিবাচক বার্তা প্রদানের কথা সুপারিশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

পুঁজিবাজারের সার্বিক সংস্কার সংক্রান্ত বিষয়ে পর্যায়ক্রমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহ, সম্পৃক্ত নিয়ন্ত্রক সংস্থাসহ অন্যান্য সকল পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ অ্যাসোসিয়েশন, চেম্বার, এজেন্সিসহ সবার সঙ্গে মত বিনিময় করবে বিএসইসি। সংস্কারের চলমান প্রক্রিয়া অনুসরণ করে দেশের পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সকলের মতামত ও অংশগ্রহণ এবং অংশীজনদের সহযোগিতায় একটি স্বচ্ছ ও সমৃদ্ধ পুঁজিবাজার গড়ে তুলতে বিএসইসি কাজ করছে। দেশের পুঁজিবাজারের সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কল্যাণে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করে বাজার সংশ্লিষ্ট সকলের মতামত ও পরামর্শের আলোকে পুঁজিবাজারের গঠনমূলক ও টেকসই সংস্কারের জন্য বিএসইসি কাজ করে যাচ্ছে।