বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেছেন, পুঁজিবাজারের সার্ভেইল্যান্স সিস্টেমের উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। সার্ভেইল্যান্স সিস্টেমের আধুনিকায়নে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করছে বিএসইসি।
শনিবার (২ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসি ভবনে পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্স, ডিএসই, সিএসই ও সিডিবিএলের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় বিএসইসির তিন কমিশনার মোহসিন চৌধুরী, আলী আকবর ও ফারজানা লালারুখ, বিএসইসির কর্মকর্তাবৃন্দ; পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের সকল সদস্য এবং ডিএসই, সিএসই ও সিডিবিএলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও কল্যাণের স্বার্থে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সংস্কারের জন্য বিএসইসি কাজ করছে। সকলের সাথে সমন্বয় করেই বাজারের জন্য ভালো কিছু করতে চাই। বিনিয়োগকারীদের কল্যাণের কথা ভেবে বিএসইসি বাজারে ক্যাপিটাল গেইনের ওপর আরোপিত করহার কমানোর বিষয়ে সরকার এবং এনবিআরের সাথে কথা বলছে। এ বিষয়টির সমাধানে আমাদের উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে। খুব দ্রুতই এ বিষয়টিতে আমরা ভালো কিছু নিয়ে আসতে পারব বলে আশা করছি।
তিনি জানান, পুঁজিবাজারের সার্ভেইল্যান্স সিস্টেমের উন্নয়নে বিএসইসি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। বিএসইসির সার্ভেইল্যান্স সিস্টেমের আধুনিকায়নে বিশ্বব্যাংকের সাথে আলোচনা চলছে।
মতবিনিময় সভায় সাধারণ বিনিয়োগকারী এবং পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও কল্যাণের স্বার্থে পুঁজিবাজারের বিভিন্ন পলিসি নিয়ে বিএসইসি, পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্স, ডিএসই, সিএসই ও সিডিবিএলের মধ্যে আলোচনা হয়।
সভায় পুঁজিবাজারের বিদ্যমান করনীতির প্রয়োজনীয় সংস্কার, পুঁজিবাজারের সার্ভেইল্যান্সের মান উন্নয়ন ও অনিয়মের সাথে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনাসহ সার্ভেইল্যান্স ব্যবস্থার সংস্কার এবং পুঁজিবাজারের বিদ্যমান শেয়ার লেনদেনের সেটেলমেন্ট সময়কে আরো দ্রুত করা ও বিনিয়োগকারীসহ বাজার সংশ্লিষ্টদের জন্য সুবিধাজনক করার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়। পুঁজিবাজারের অনিয়ম রোধ এবং কারসাজিকারীদের শাস্তির আওতায় আনতে সার্ভেইল্যান্স কার্যক্রম আধুনিকায়ন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত সবাই বিএসইসির পাশাপাশি স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর সার্ভেইল্যান্স সিস্টেমের উন্নয়ন এবং তাদের সার্ভেইল্যান্স কার্যক্রমও জোরদার করার বিষয়ে মত দেন। পাশাপাশি, বাজারে প্রাইস ম্যানুপুলেশন ও ইনসাইডার ট্রেডিংসহ অন্যান্য অনিয়ম রোধে বিএসইসি, ডিএসই, সিএসইর সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের সার্ভেইল্যান্স কার্যক্রম আরো শক্তিশালী করার বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়। পুঁজিবাজারকে আরো গতিশীল ও বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ আগ্রহী করতে পুঁজিবাজারে বিদ্যামান করনীতির সংস্কার আনয়ন এবং করহার যৌক্তিকীকরণের বিষয়ে আলোচনা হয়।
পুঁজিবাজারের বিদ্যামান শেয়ার লেনদেনের সেটেলমেন্ট সময়কে আরো দ্রুত করা এবং বিনিয়োগকারীসহ বাজার সংশ্লিষ্টদের জন্য সুবিধাজনক করার জন্য কীভাবে কাজ করা যেতে পারে, করার প্রক্রিয়াসহ এর সুবিধা-অসুবিধা ও ফলাফল বিষয়ে বিস্তারিত সভায় আলোচনা হয়। ডিএসই, সিএসই, সিডিবিএল, পুঁজিবাজারের ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিসহ বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি নিয়ে কমিটি করার সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় উপস্থি সবাই দেশের পুঁজিবাজারকে সংস্কার ও উন্নয়নের মাধ্যমে আরো ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে একসাথে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
আজকের সফল ও ফলপ্রসূ সভার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের পুঁজিবাজারে সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের মতামতের ভিত্তিতে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এটি শিগগির দেশের পুঁজিবাজারের জন্য দীর্ঘমেয়াদি সুফল বয়ে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।