ঈদুল ফিতরের পর ২৪ মে থেকে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। আবাসিক হলগুলো খুলবে ১৭ মে।
করোনাকালীন উচ্চ শিক্ষার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সোয়া ২টায় অনলাইনে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী এ কথা জানান।
দীপু মনি বলেন, ‘হল ও বিশ্ববিদ্যালয় খোলার আগে সব শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীর করোনার টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। ইতোমধ্যে তাদের টিকাদান কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় চালু হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের ক্লাস হবে অনলাইনে। আর শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরুর পর পরীক্ষা শুরু হবে। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার আগে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও আবাসিক হলগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কাজ শেষ করতে হবে। ক্যাম্পাস ও হলে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে সংস্কার কাজ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, কেউ কেউ বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতির নেওয়ার জন্যও হলে ওঠার চেষ্টা করছে। সব বিষয় বিবেচনা করে পবিত্র ঈদুর ফিতরের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
স্কুল-কলেজ চালুর বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় পরামর্শক কমিটির মতামত নিয়ে কবে থেকে স্কুল-কলেজে পাঠদান শুরু করা যায় তা জানিয়ে দেওয়া হবে।’
হলে উঠতে টিকাগ্রহণ বাধ্যতামূলক দীপু মনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে শিক্ষার্থীদের করোনা টিকাগ্রহণ করে নিজ নিজ সিটে উঠতে হবে। টিকা ছাড়া কোনো শিক্ষার্থীকে হলে উঠতে দেওয়া হবে না।
দীপু মনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার আগে আমরা সব শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ শিক্ষার্থীদের করোনা টিকার আওতায় আনবো। যদি কেউ টিকা না নিতে চিকিৎসকের যৌক্তিক কারণ দাখিল করতে পারেন তবে সে টিকা ছাড়াই আবাসিক হলে উঠতে পারবেন। অন্যদের ক্ষেত্রে টিকা বাধ্যতামূলক।
শিক্ষার্থীরা যাতে কোনোভাবেই স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে না পড়েন সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নজর রাখা নির্দেশ দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পাঠদান শুরুর পর স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে ক্লাস-পরীক্ষা নিতে হবে। আবাসিক হলে সাবান, হ্যান্ড স্যানেটাইজার ও নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
অবিলম্বে হল ত্যাগের নির্দেশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হলের ফটকের তালা ভেঙে প্রবেশ করার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী অবিলম্বে এসব শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করার নির্দেশনা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, এক শ্রেণির মানুষ বর্তমান সরকারকে নানাভাবে ঝামেলায় ফেলার চেষ্টা করলেও তারা ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমানে তাদের মতাদর্শের কিছু শিক্ষার্থীদের দিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধ থাকা আবাসিক হলের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করতে উসকিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৭ মার্চ করোনার প্রাদুর্ভাব রুখতে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কয়েক ধাপে বাড়ানোর পর ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়। করোনার প্রাদুর্ভাব কমে আসায় চলতি বছরের শুরু থেকেই বিভিন্ন মহল থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়ার দাবি আসতে থাকে। এ নিয়ে আন্দোলনে নামে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সর্বশেষ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর ফটকের তালা ভেঙে প্রবেশ করেন। এরপর ঢাবি, রাবিসহ আরও কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।