সরকারসহ বিভিন্ন মহলের চাপে গত এপ্রিল মাসে কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের প্রচলিত রাজনীতি থেকে মুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় মাদ্রাসাগুলোর নীতিনির্ধারণী বোর্ড আল হাইআতুল উলয়া লিল জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ। সে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে।
কওমি শিক্ষা বোর্ডের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আগের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে তা বাস্তবায়নের জন্য দেশের সব কওমি মাদ্রাসাকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়ার চেয়ারম্যান আল্লামা মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে বোর্ডের স্থায়ী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, এখন থেকে মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকরা যেন কোনো ধরনের রাজনীতিতে যুক্ত হতে না পারেন, সে বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য সব মাদ্রাসার প্রধানকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দেওয়া হবে। এর পরও যদি কোনো ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতিতে যুক্ত হন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কওমি শিক্ষা বোর্ডের অফিস সম্পাদক মু. অছিউর রহমান বলেছেন, ‘মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের প্রচলিত রাজনীতি থেকে মুক্ত রাখতে গত এপ্রিল মাসে নেওয়া বোর্ডের সিদ্ধান্ত গতকাল বুধবারের (১৬ জুন) সভায় চূ্ড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’
এপ্রিল মাসে আল হাইআতুল উলয়া লিল জামি’আতিল কওমিয়ার নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও তত্ত্বাবধানের জন্য আল-হাইআতুল উলয়ার অধীন পাঁচ শিক্ষা বোর্ডের পাঁচজন, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া থেকে পাঁচজন এবং চেয়ারম্যান মনোনীত পাঁচজনের সমন্বয়ে একটি সাব-কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘বাস্তবায়ন ও সমন্বয় সাব-কমিটি’। বুধবারের সভায় ‘বাস্তবায়ন ও সমন্বয় সাব-কমিটি’তে আরও দুই সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সাব-কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে বোর্ডের চেয়ারম্যান আল্লামা মাহমুদুল হাসানকে। এ কমিটি মাদরাসাগুলোতে আল হাইআতুল উলয়া লিল জামি’আতিল কওমিয়ার সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন করবে।
এর আগে গত ২৫ এপ্রিল কওমি শিক্ষাঙ্গনে বিরাজমান অস্থিরতা থেকে ঐতিহ্যবাহী এ শিক্ষাব্যবস্থার সুরক্ষার জন্য স্থায়ী কমিটির সভায় কওমি আলেমরা ছয়টি সিদ্ধান্ত নেন। সেগুলো হলো—কওমি মাদ্রাসা সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ গ্রহণ করবে একমাত্র আল হাইআতুল উলয়া লিল জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ। কোনো সংগঠন বা ব্যক্তি আল-হাইআতুল উলয়ার সিদ্ধান্ত ছাড়া পৃথকভাবে কওমি মাদ্রাসা বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপ বা উদ্যোগ নিতে পারবে না। কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকরা প্রচলিত সব ধরনের রাজনীতি থেকে মুক্ত থাকবেন।