শিক্ষা

সহকারী মৌলভি পদে তৃতীয় বিভাগ জটিলতা: হতাশায় প্রার্থীরা

চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে প্রাথমিক সুপারিশ পেলেও মাদ্রাসা থেকে ফাজিলের তৃতীয় বিভাগ থাকলে চূড়ান্ত সুপারিশ নিয়ে জটিলতা সহসাই কাটছে না। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন প্রাথকমিকভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত কয়েকশ নিবন্ধিত প্রার্থী।

জানা গেছে, রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের একটি বৈঠক হয়েছে। কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সিনিয়র সচিব কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে এ বৈঠক হয়।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, এ সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে মন্ত্রণালয়ের ডাকা মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যায়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) প্রতিনিধিরা বৈঠকে অংশ নেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় নথিপত্রসহ এ সংক্রান্ত আরও আলোচনার প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যায়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) এর সদস্য (অর্থ ও প্রশাসন) এস এম মাসুদুর রহমান বলেন, মন্ত্রণালয় আমাদের কাছে যেভাবে চেয়েছে আমরা সেগুলো উপস্থাপন করেছি। যাতে সঙ্গতিপূর্ণ হয় সেটা আমরা উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি। মন্ত্রণালয় পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।

জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মাদ্রাসা) শাহনওয়াজ দিলরুবা বেগম বলেন, বিষয়টি নিয়ে এখনো চূড়ান্ত সমাধান আসেনি। এনটি আরসিএর কাছ থেকে আমরা কিছু ডকুমেন্টস পেয়েছি। আমরা প্রয়োজনীয় আরও কিছু ডকুমেন্টস চেয়েছি। সেগুলো পেলে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।

প্রার্থীরা বলছেন, এ জটিলতা সৃষ্টিই যদি করবে আমাদের আবেদনের সুযোগ দেওয়া হলো কেন? আমরা আবেদন করতে পেরেছি। প্রাথমিকভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছি। এখন নতুনভাবে এ জটিলতা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

জানা গেছে, গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করে বিভিন্ন মাদ্রাসায় সহকারী মৌলভী পদে নিয়োগের জন্য নির্বাচিত প্রার্থীদের চূড়ান্ত নিয়োগ সুপারিশ করবে না বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যায়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। কয়েকশ নিবন্ধিত প্রার্থী ফাজিলে তৃতীয় বিভাগ নিয়ে সহকারী মৌলভী পদে নিয়োগে জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। সনদ যাচাই করে তাদের বাদ দেওয়া হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতেই বিষয়টি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়।

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এন্ট্রি লেভেলের শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রার্থী বাছাইয়ের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান এনটিআরসিএ কর্মকর্তারা বলছেন, সহকারী মৌলভী পদটি মূলত মাদ্রাসার ধর্ম বিষয়ের শিক্ষক পদ। স্কুলের এ বিষয়ে শিক্ষককে ধর্ম বিষয়ের সহকারী শিক্ষক বলা হলেও মাদ্রাসায় এ পদটির নাম সহকারী মৌলভী।  তবে, এ দুই পদে নিবন্ধন প্রক্রিয়া একই। একই শিক্ষক নিবন্ধন সনদ নিয়ে ধর্ম বিষয়ের সহকারী শিক্ষক ও সহকারী মৌলভী পদে নিয়োগ সুপারিশ পেতে আবেদন করার সুযোগ পান নিবন্ধিত প্রার্থীরা।

এনটিআরসিএ থেকে পাওয়া তথ্যমতে, মাদ্রাসার বিদ্যমান এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী সহকারী মৌলভী পদের জন্য সর্বশেষ ডিগ্রি বা ফাজিলে তৃতীয় শ্রেণি গ্রহণযোগ্য না, তবে সর্বশেষ স্তর ছাড়া অন্যান্য স্তরের যেকোনও একটিতে তৃতীয় শ্রেণি গ্রহণযোগ্য। কিন্তু স্কুলের এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী একই শিক্ষাগত ডিগ্রি নিয়ে ধর্ম শিক্ষক হতে সমগ্র শিক্ষা জীবনে যেকোনও একটি তৃতীয় শ্রেণি বা বিভাগ গ্রহণযোগ্য।

চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে বহু প্রার্থী ফাজিলে তৃতীয় বিভাগ নিয়ে সহকারী মৌলভী পদে নিয়োগ সুপারিশ পেয়েছেন। নিয়োগ সুপারিশের আগে যাচাই-বাছাই করতে তাদের সনদ সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে, যারা ফাজিলে তৃতীয় বিভাগ পেয়েছেন তাদের চূড়ান্ত সুপারিশ না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সে জটিলতা নিরসনে বৈঠকে বসে মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে এনটিআরসিএর একজন কর্মকর্তা জানান, বিদ্যমান এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশ করা হবে। এমপিও নীতিমালা অনুসারে আমরা চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন নিয়েছি, সেভাবেই নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ করা হবে।