শিক্ষা

ইনডেক্সধারীদের জন্য আলাদা গণবিজ্ঞপ্তি দাবি 

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) মাধ্যমে সনদপ্রাপ্ত ইনডেক্সধারী (নিবন্ধিত) শিক্ষকরা বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের সুযোগ পেতেন। কিন্তু, সর্বশেষ চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে সে সুযোগ স্থগিত করে দেওয়া হয়। এ নিয়ে চরম হতাশ এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। এতে পাঠদানে মনোযোগ হারাচ্ছেন তারা।

বদলির জন্য নিয়োগ নীতিমালার ৭ নম্বর ধারা স্থগিতের পর থেকে বদলি নিয়ে শিক্ষকরা বিভিন্নভাবে তাদের দাবি জানিয়ে আসছেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা আলাদা গণবিজ্ঞপ্তি দাবি করছেন। বদলির নীতিমালা তৈরি করতে মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) শিক্ষা সচিব বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বদলিপ্রত্যাশী লক্ষাধিক শিক্ষকের বেশিরভাগই নিজ জেলা থেকে ৩০০ থেকে ৮০০ কিলোমিটার দূরে শিক্ষকতা করছেন। অনেকের বৃদ্ধ বাবা-মা অসহায়ভাবে বাড়িতে একাকি থাকেন, তাদের দেখার কেউ নেই। নিকট আত্মীয়-স্বজন মারা গেলেও শেষদেখার সুযোগ থাকে না।

শিক্ষকরা জানিয়েছেন, স্বল্প বেতন, মানসিক নির্যাতন ও চরম হয়রানির কারণে চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন খুলনায় কর্মরত রংপুরের এক শিক্ষক। কুমিল্লা ও চাঁদপুরে শিক্ষকদের এমপিও ও পদন্নোতি আটকে রেখেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। সিলেটে কর্মরত কুড়িগ্রামের এক শিক্ষকের মা-বাবা দুজনই ক্যান্সারে আক্রান্ত। বদলি না থাকায় তিনি দিশেহারা। পার্বত্য জেলায় কর্মরত নারায়ণগঞ্জের নারী শিক্ষক নাজমা খাতুনের সংসার ভাঙার মতো অবস্থা হয়েছে।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, বদলি প্রথা চালুর দাবিতে উচ্চ আদালতে একটি রিট দাখিল করা হয়েছে। আদালত শিক্ষকদের পক্ষে রায় দেন ২০২০ সালের ৮ অক্টোবর। ২০২২ সালে এনটিআরসিএ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ তা খারিজ করে বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন।

হাইকোর্ট রায়ে উল্লেখ করেছেন,‘দরখাস্তকারীগণ নিজ নিজ বাড়ি থেকে অনেক দূরে বিভিন্ন জেলার স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় কর্মরত। চাকরিরত এমপিওভুক্ত ইন্ডেক্সধারী শিক্ষকরা বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে নিজ নিজ কর্মস্থল পরিবর্তন করে পদ খালি থাকা সাপেক্ষে পছন্দের প্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে আইনত অধিকারী।’

বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে বেসরকারি এমপিওভুক্ত ইন্ডেক্সধারী শিক্ষকদের প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন অথবা বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন তথা বদলি প্রথা চালুর জন্য নীতিমালা প্রণয়নে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সচিব বরাবর অনুরোধ জানান শিক্ষকরা।

পরে এনটিআরসিএ’র সামনে মানববন্ধন করেন শিক্ষকরা। ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের আলাদা গণবিজ্ঞপ্তি প্রত্যাশী ঐক্য পরিষদ ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।