শিক্ষা

কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলেন শিক্ষকরা

পরীক্ষার রুটিন ও সাময়িক সময়ের বিবেচনায় শনিবার (১১ মে) কর্মবিরতির কর্মসূচি স্থগিত করেছে বাংলাদেশ মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক সমিতি। শুক্রবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো শনিবার খোলা রাখার প্রতিবাদে বাংলাদেশ মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক সমিতির আহ্বানে ১১ মে শনিবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ১ ঘণ্টা ‘কর্মবিরতি’ যথোপযুক্ত কারণে স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক সমিতি।

এর আগে, গত ৯ মে বাংলাদেশ মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির এ সংক্রান্ত এক ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সভাপতিত্ব ও সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম বিপ্লব সঞ্চালনা করেন।

সভায় সবার মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, শিখন ঘাটতি পূরণের অজুহাতে সাপ্তাহিক ছুটি শনিবার বাতিল করে শুধুমাত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো খোলা রাখা হয়েছে। কতদিন পর্যন্ত কিংবা কতটি শনিবার বিদ্যালয় খোলা থাকবে তা মন্ত্রণালয় কিংবা অধিদপ্তর স্পষ্ট করেননি। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

বছরের শুরুতেই অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করা হয়েছিল। সেখানে কর্মদিবসসহ যাবতীয় ছুটি উল্লেখ করা আছে। আর পাঠদান কার্যক্রমে কর্মঘণ্টাও বাড়ানো আছে। গত রমজান মাসে নির্ধারিত ছুটি ১৫ দিন বাতিল করে ক্লাস কার্যক্রমের নির্দেশনা দেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। এর পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষকদের চাপা ক্ষোভ থাকা সত্ত্বেও সরকারি নির্দেশনা মেনে নেন।

এতদসত্ত্বেও সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রতি শনিবার কেবলমাত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত পাঠদানের নির্দেশনা দিলে শিক্ষকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়। এমনকি শিক্ষামন্ত্রী প্রয়োজনে শুক্রবার ক্লাস নেওয়ারও ঘোষণা দেন। এসব কারণে ১১ মে শনিবার ১ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক সমিতি।

গত ৮ মে গণমাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তাব্যক্তিদের পক্ষ থেকে শনিবার ক্লাস নেওয়াটা সাময়িক বলে বক্তব্য দেন এবং ওই দিন প্রকাশিত জুলাই মাসের ষান্মাসিক পরীক্ষার রুটিনে পরীক্ষাকালীন যতগুলি শনিবার রয়েছে তাতে কোনো পরীক্ষা না রাখার বিষয়টি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ হয়। সে বিবেচনায় বাংলাদেশ মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে ১১ মে শনিবার সকাল ১০ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত ১ ঘণ্টা কর্মবিরতির কর্মসূচি স্থগিত করা হলো।

নেতারা বলেন, শিখন ঘাটতির বিষয়টি শুধুমাত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উপর চাপিয়ে দেওয়াটা যথাযথ মনে হয়নি। এতে শিক্ষকরা হতাশ হন। যাই হোক, যেকোনো নির্দেশনা মৌখিক না দিয়ে পরিপত্র তথা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট করে দেয়াটাই সমীচীন। নেতৃবৃন্দ, কর্মবিরতি পালনের কর্মসূচিকে শিক্ষক সমাজ, শিক্ষার্থী-অভিভাবক নীতিগত সমর্থন করায় ধন্যবাদ জানান ও কৃতজ্ঞতা পোষণ করেন। পাশাপাশি ১১ মে শনিবার ১ ঘণ্টা কর্মবিরতির কর্মসূচি স্থগিত করার ঘোষণাটি মেনে নেওয়ার জন্য সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।

সভায় বক্তব্য দেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও ঢাকা মহানগরের আহ্বায়ক মোহাম্মদ ইয়াছিন, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও বগুড়ার শেরপুর উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুস সোবহান, কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও খাগড়াছড়ি জেলার সাধারণ সম্পাদক তমাল দাশ লিটন, কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও চাঁদপুর জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আলী আক্কাছ, কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ সম্পাদক ও মুন্সীগঞ্জ জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক নিরঞ্জন সরকার, কেন্দ্রীয় কমিটির পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও চাঁদপুর জেলা অর্থ সম্পাদক ফয়েজুল হক ফয়েজ, কেন্দ্রীয় কমিটির সেমিনার সম্পাদক ও বগুড়ার ধুনট উপজেলার সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও কুমিল্লা জেলার সাধারণ সম্পাদক মো. মেজবাহ উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলা কমিটির সহ-সভাপতি জবাইদুর রহমান, বগুড়া জেলা নেতা ও কেন্দ্রীয় সদস্য মো. বাশার আল হামিদ।