শিক্ষা

‘টিইউ টিইউ’ স্লোগানে কম্পিত তিতুমীর

সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকালে মহাখালীর আমতলীতে সরকারি তিতুমীর কলেজে গিয়ে দেখা যায়, ক্যাম্পাসের ভেতরে ফটকের কাছে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা ‘ক্লোজডাউন’ কর্মসূচি পালন করছেন। শিক্ষার্থীরা ‘টিইউ টিইউ’, ‘অধ্যক্ষ না ভিসি’ বলে স্লোগান দেন। 

‘টিইউ’ অর্থে শিক্ষার্থীরা তিতুমীর ইউনিভার্সিটি বুঝিয়েছেন।

কলেজের বাইরে সড়কের একপাশে পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেছে। একইসঙ্গে রাওয়া ক্লাবের সামনে থেকে মহাখালী রেলগেট পর্যন্ত সড়কে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা গোলাম কিবরিয়া মুয়াজ বলেন, ‘সকালে ক্যাম্পাসের ভেতরে পুলিশ অবস্থান নেয়। ক্যাম্পাসের ভেতরে পুলিশ কীভাবে ডুকলো এটার জবাব চাই। এর প্রতিবাদে আমরা ক্যাম্পাসের ভেতরে দুপুর ১২টায় একটি বিক্ষোভ মিছিল করবো। আর পূর্ব ঘোষিত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি চলমান থাকবে।’

পরিস্থিতি মোকাবিলায় মোতায়েন করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য

পুলিশ জানায়, আন্দোলনের জন্য যাতে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না হয় সেই বিষয়টি দেখা হচ্ছে।

ঘটনাস্থল থেকে ঢাকা মেট্রেপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপারেশন) এ এফ এম তারিক হোসেন খান বলেন, ‘‘পুলিশ সতর্ক অবস্থায় আছে। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের ভেতরে অবস্থান করে কর্মসূচি পালন করুক, পুলিশ এটাই চায়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে পুলিশ কাজ করছে।’’

সোমবার (১৮ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে সড়কে যান চলাচল বন্ধের পাশাপাশি ঢাকার সঙ্গে প্রায় সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। গতকাল শিক্ষার্থীদের অবরোধের পরও কমলাপুরগামী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেন দ্রুতগতিতে মহাখালী রেলক্রসিং অতিক্রম করে। রেলপথ অবরোধ করা শিক্ষার্থীরা তখন ক্ষুব্ধ হয়ে ট্রেনে পাথর ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। ট্রেনের জানালা ভাঙচুর করা হয়। এতে শিশুসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। বিকেল ৪টা পর্যন্ত তাদের এ কর্মসূচি চলে। এতে ভোগান্তিতে পরেন সাধারণ মানুষ। 

বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ডাকা হয়। পরে বৈঠক করতে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যায়।

তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের তিনটি দাবি হলো—

১. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিল করে ৭ কলেজ থেকে তিতুমীর কলেজকে পৃথক করতে হবে।

২. তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের লক্ষ্যে কমিশন গঠন করতে হবে।

৩. তিতুমীরকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় করার রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে।