বিভিন্ন ভুয়া প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে জাল সনদ নিয়ে এমপিওভুক্ত হওয়া অন্তত ১২০ জন শিক্ষককে শনাক্ত করেছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, মাদ্রাসার প্রধানরা তা করেননি। এবার মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর সতর্ক করে বলেছে, দ্রুত ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মামলা না হলে মাদ্রাসাপ্রধানদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্প্রতি মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে চিহ্নিত শিক্ষকদের প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের কাছে চিঠি দিয়ে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, অন্তত ১২০ জন শিক্ষকের জাল সনদের প্রমাণ পাওয়ার পর তাদের ইনডেক্স কর্তন করে বেতন বন্ধ এবং বেতন-ভাতা হিসেবে নেওয়া অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের। কিন্তু, তারা এ কাজে গড়িমসি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর আগে গত ১ জানুয়ারি একই অভিযোগে বিভিন্ন মাদ্রাসার জাল সনদধারী ২৬ জন শিক্ষকের তালিকা প্রকাশ করে তাদের এমপিওশিট থেকে ইনডেক্স কাটা হয়। এছাড়াও, বিভিন্ন সময়ে জাল সনদধারী শিক্ষকদের চিহ্নিত করে তাদের তালিকা প্রকাশ করে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের চিঠিতে বলা হয়, জাল সনদে চাকরি করা শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে মামলা না করলে সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসার প্রধানদের এমপিও স্থগিতসহ প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত ৭ জানুয়ারি অধিদপ্তরের পরিচালক এইচ এম নুরুল ইসলামের সই করা চিঠিতে বলা হয়, জাল সনদধারী মাদ্রাসা শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার নির্দেশ দিয়েছে অধিদপ্তর। একইসঙ্গে ইনডেক্স কর্তন করা এসব শিক্ষকের নেওয়া বেতন-ভাতার সব টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফেরত দিয়ে তার প্রমাণ পাঠানোর জন্য মাদ্রাসাপ্রধানদের বলা হয়েছে। আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে জাল সনদধারীদের বিরুদ্ধে মামলা না করলে সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসাপ্রধানদের এমপিও স্থগিতসহ প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্প্রতি মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের এক আদেশে বলা হয়েছে, এনটিআরসিএর ভুয়া ও জাল সনদের মাধ্যমে এমপিওভুক্ত হওয়ায় সনদধারীদের বিরুদ্ধে এমপিও বাছাই ও অনুমোদন কমিটির সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষকদের ইনডেক্স কর্তন করা হয়।
আদেশে আরও বলা হয়, প্রতিষ্ঠানপ্রধানকে ইনডেক্স কর্তন করা শিক্ষকদের উত্তোলিত বেতন-ভাতার সমুদয় অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করে প্রমাণসহ অধিদপ্তরে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু, এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এসব জাল সনদধারী শিক্ষকের আবেদন পাঠানোর ব্যাপারে মাদ্রাসাপ্রধানকে সতর্ক করা হয়। রাষ্ট্রীয় কোষাগারে তাদের বেতন-ভাতার টাকা ফেরত দিতে যেকোনো ধরনের শৈথিল্যের জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধান দায়ী থাকবেন বলে জানানো হয়েছে।