বিনোদন

সুশান্তের চলে যাওয়ার এক বছর

বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত। গত বছর ১৪ জুন নিজ ফ্ল্যাটে জনপ্রিয় এই অভিনেতার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। ‘এম এস ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’ সিনেমাখ্যাত সুশান্তের না ফেরার দেশে চলে যাওয়ার আজ এক বছর পূর্ণ হলো।

১৯৮৬ সালের ২১ জানুয়ারি বিহারের পাটনায় সুশান্তের জন্ম। বাবা কৃষ্ণ কুমার সিং একজন টেকনিক্যাল অফিসার। মা উষা সিং গৃহিণী। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে সুশান্ত সবচেয়ে ছোট।

পড়ালেখায় সুশান্ত ছিলেন মেধাবী। ২০০৩ সালে অল ইন্ডিয়া কম্পিটিটিভ পরীক্ষায় সপ্তম স্থান অর্জন করেন। এরপর দিল্লির টেকনিক‌্যাল ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন। কিন্তু শোবিজ অঙ্গনের টানে পড়াশোনা শেষ না করেই মুম্বাই পাড়ি জমান তিনি।

ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া অবস্থাতেই নাচের ক্লাসে ভর্তি হন সুশান্ত। পরে ব্যাকগ্রাউন্ড ড্যানসার হিসেবে কাজ করেন। ২০০৬ সালে কমনওয়েলথ গেমসে ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনের পারফরম্যান্সে ব্যাকগ্রাউন্ড ড্যানসার ছিলেন সুশান্ত। পরে বালাজি টেলিফিল্মসের ‘কিস দেশ ম্যায় হ্যায় মেরা দিল’ সিরিয়ালের মাধ্যমে হিন্দি ধারাবাহিকে পা রাখেন। এরপর একাধিক ধারাবাহিকে কাজ করেছেন। তবে ‘পবিত্র রিশতা’ ধারাবাহিকের মাধ্যমে বিশেষ খ্যাতি লাভ করেন।  

২০১৩ সালে ‘কাই পো চে’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে তার অভিষেক হয়। এরপর ‘শুদ্ধ দেশি রোমান্স’, ‘পিকে’, ‘ডিটেকটিভ ব্যোমকেশ বক্সি’, ‘এম এস ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’, ‘ছিছোড়ে’ ইত্যাদি সিনেমায় অভিনয় করে ভক্তদের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন।

অভিনয়ের পাশাপাশি অনেক বিষয়ে শখ ছিল সুশান্তের। এয়ার-ক্রাফটের পাইলট হতে চেয়েছিলেন তিনি। এই অভিনেতার ৫০টি স্বপ্নের তালিকায় এটি প্রথমে ছিল। ন্যাশনাল অলিম্পিয়াডে পদার্থবিজ্ঞানে বিজয়ী হয়েছিলেন সুশান্ত। মায়ের মৃত্যুর পর সুশান্ত তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে জ্যোতির্বিদ্যার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন। মহাকাশে শনির বলয় দেখার জন্য তিনি অতি উন্নত মানের টেলিস্কোপ কিনেছিলেন। গিটার বাজানো থেকে শুরু করে দুই হাত দিয়ে কীভাবে লিখতে হয় তা শেখা, সুশান্তের জীবনে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের তৃষ্ণা কখনই শেষ হয়নি। সবসময়ই নিজের একটি বিলাসবহুল গাড়ির স্বপ্ন দেখতেন সুশান্ত।

গত বছর ১৪ জুন নিজ ফ্ল্যাট থেকে সুশান্ত সিংয়ের লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে সুশান্তের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এই অভিনেতার পরিবার ও ভক্তরা এর পেছনে অন্য কারণ রয়েছে বলে দাবি করেন। শুরুতে মুম্বাই পুলিশ তদন্ত শুরু করে। সুশান্তের পরিবার মামলা দায়ের করলে বিহার পুলিশও বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শুরু করে। পরবর্তী সময়ে এই মামলার ভার নেয় ভারতের সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন ( সিবিআই)। তবে এটি নিয়ে এখনো রহস্য কাটেনি। সুশান্তের মৃত্যুর ঘটনায় এখনো চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়নি সিবিআই।