ভারতীয় শোবিজ অঙ্গনে অনেকদিন ধরেই কাজ করছেন সানি লিওন। ধীরে ধীরে নিজের শক্ত অবস্থান তৈরি করছেন। তারপরও মাঝেমধ্যেই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন এই অভিনেত্রী।
সম্প্রতি ‘মধুবন মে রাধিকা নাচে’ গানে নেচে বিতর্কিত হয়েছেন সানি। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগও উঠেছে। তাকে ভারত ছাড়া করার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। তবে সানি এবারই প্রথম এমন বিতর্কে জড়ালেন তা কিন্তু নয়। সানি লিওনের বিতর্কিত নানা ঘটনা নিয়ে এই প্রতিবেদন:
রাগিনী এমএমএস-টু নিয়ে বিতর্ক: একতা কাপুর পরিচালিত ‘রাগিনী এমএমএস-টু’ সিনেমার জন্য বিতর্কে জড়ান সানি। অভিনেত্রী সন্ধ্যা মৃদুলের সঙ্গে চুম্বন দৃশ্যসহ বেশ কিছু রগরগে দৃশ্যে অভিনয় করার কারণে বিতর্কের মুখে পড়েন সানি। এ কারণে তার বিরুদ্ধে অনেকে প্রতিবাদও করেন।
ধর্ষণ নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্ক: সানি লিওন টুইটার বার্তায় লিখেছিলেন: ‘রেপ ইজ নট অ্যা ক্রাইম, ইটস জাস্ট সারপ্রাইজিং সেক্স’। এটি পরবর্তী সময়ে প্রকাশ করেন তার সাবেক ‘বিগ বস’ প্রতিযোগী কামাল আর খান। এমন মন্তব্য স্বাভাবিকভাবেই বিতর্কের ঝড় তোলে। যদিও সানির দাবি- তিনি এমন কোনো কথা বলেননি।
‘জিসম-টু’ নিয়ে বিতর্ক: জিসম-টু সিনেমায় সানি লিওনের নাম উচ্চারণের পর থেকেই বিতর্কের শুরু। পর্নো সিনেমার নায়িকাকে নেওয়ায় পরিচালক মহেশ ভাটকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এরপর সিনেমার পোস্টার বিতর্ক থেকে শুরু করে রগরগে দৃশ্য, সিনেমার প্রচার বন্ধ করা, এমনকি সানি লিওনের এ সিনেমায় অভিনয় করার বিষয়েও বিতর্ক তৈরি হয়। বিতর্কের মূল কারণ ছিল তার সিনেমা সমাজে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
পর্নো সিনেমা নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্কিত: বলিউডের রুপালি পর্দায় অভিষেকের পরেও সানি লিওনকে শুনতে হয়েছে তার অতীত পেশা নিয়ে কটুক্তি। পর্নো সিনেমায় কাজ করা প্রসঙ্গে এক পর্যয়ে সানি বলেছিলেন, ‘পর্নো তারকা মানেই প্রস্টিটিউট নয়’। ইন্ডিয়াতে কোনো পর্নো সিনেমার শিল্প নেই, তাই তাদের এ সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই।’ সানির এমন মন্তব্য ভারতীয় মিডিয়া এবং বলিউড পাড়ায় বিতর্ক তৈরি করেছিল।
বিগ বস বিতর্ক: ‘বিগ বস’ এর পঞ্চম আসরে অংশগ্রহণ করেছিলেন সানি লিওন। সেসময় তার আসল পরিচয় বাইরের কেউ জানতো না। অনেকটা পরিচয় গোপন করেই ‘বিগ বসে’ এসেছিলেন তিনি। তারপর তার হাসি এবং আকর্ষণীয় সব আচরণ দিয়ে দর্শকের মন জয় করে নেন এ অভিনেত্রী। কিন্তু পরিচয় প্রকাশের পর থেকেই শুরু হয় বিতর্ক। এমনকি ইন্ডিয়ান মিনিস্ট্রি অব ইনফরমেশন অ্যান্ড ব্রডকাস্টিং অভিযোগ তুলেছিল- টিভি চ্যানেলগুলো সানি লিওনকে অনুষ্ঠানে নিয়ে পর্নোগ্রাফীর প্রচারণা করছে।
সাংবাদিককে চড়: গুজরাটের সুরাটে ‘প্লে হোলি উইথ সানি লিওন’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন সানি। স্বামী ড্যানিয়েল ওয়েবারকে নিয়ে সকালে সেখানে পৌঁছে গিয়েছিলেন ইন্দো-কানাডিয়ান এ অভিনেত্রী। সেখানে একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ওঠেন তারা। হোটেলে পৌঁছানোর পর একজন সাংবাদিক হোটেলের বারান্দাতেই সানির সাক্ষাৎকার নেন। কয়েকটি প্রশ্ন করার পরই সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি আগে পর্নো তারকা ছিলেন, এখন আপনি সিনেমার তারকা। আপনি এখন কত টাকা নেন?’ প্রশ্ন শুনে অত্যন্ত রেগে যান সানি। সাংবাদিককে আবারো প্রশ্নটি করতে বলেন তিনি। সাংবাদিক তখন বলেন, ‘রাতে অনুষ্ঠান করার জন্য আপনি কত টাকা নেন?’ প্রশ্ন শুনে সঙ্গে সঙ্গে জবাব দেন সানি। সাংবাদিককে সবার সামনেই কষে চড় মারেন তিনি।
কনডমের বিজ্ঞাপন বিতর্ক: সিনেমার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি কনডমের বিজ্ঞাপনেও দেখা গেছে এ অভিনেত্রীকে। ভারতের পর্যটন নগরী গোয়ার কাদাম্বা ট্রান্সপোর্ট করপোরেশনের বাসগুলোতে সানি লিওনের বিজ্ঞাপন ব্যবহার হতো। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এটি নিয়ে আপত্তি জানানো হয়। আপত্তি জানায় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা। তাদের আপত্তির মুখে সানির এই বিজ্ঞাপন সরিয়ে ফেলা হয়।
পর্নোগ্রাফি প্রচারের অভিযোগ: চেন্নাইয়ে একটি অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন সানি লিওন। এরপর চেন্নাইয়ের নাজারেথপেত থানায় এই অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন এনোচ মজেস নামে এক ব্যক্তি। অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘মাস্তিজাদে’ সিনেমাখ্যাত এই অভিনেত্রী পর্নোগ্রাফি প্রচার করছেন, যা ভারতীয় আইনে নিষিদ্ধ। এ কারণে সানিকে গ্রেপ্তারের অনুরোধ জানান তিনি। পরে আবারো এ ধরনের জটিলতায় পড়েন সানি। এই অভিনেত্রীর জনপ্রিয়তার কথা মাথায় রেখে ভারতের বেঙ্গালুরুতে একটি অনুষ্ঠানে পারফরম্যান্স করার আমন্ত্রণ জানানো হয়। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু অনুষ্ঠানে সানির উপস্থিতি নিয়ে আপত্তি জানায় কর্ণাটক রক্ষণ বেদিকা যুবসেনা নামে একটি সংগঠন। সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, অনুষ্ঠানে কন্নড় অভিনেত্রীদের পারফরম্যান্স নিয়ে তাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু সানি লিওনকে পারফর্ম করতে দিতে রাজি নন তারা।