চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানের প্রার্থিতা প্রসঙ্গে হাই কোর্টের দেয়া রায় স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে নিপুণের আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন গ্রহণ করে তাকে আপিলের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। ফলে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ‘আপাতত নিপুণের দায়িত্ব পালনে বাধা নেই’ বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আজ সোমবার (২১ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
বিষয়টি নিয়ে বিচলিত নন জায়েদ খান। তিনি এ প্রসঙ্গে রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আজ আদালত চূড়ান্ত রায় দেয়নি। নিপুণ আক্তার আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছিলেন, আপিল বিভাগ তা গ্রহণ করেছেন। এ বিষয়টির ভুল ব্যাখ্যা করছেন অনেকে। চলতি সপ্তাহে বিষয়টি নিয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। আমার আইনের প্রতি শ্রদ্ধা আছে। আশা করি, পরিশেষে সত্যের জয় হবে।’
‘এখন শুনানি হবে। আমি শুনানির প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমি বিশ্বাস করি শুনানিতে রায় আমার পক্ষে আসবে। কারণ আমি ভোটে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক।’ যোগ করেন এই চিত্রনায়ক।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ শিল্পী সমিতি নির্বাচনের আপিল বোর্ডের প্রার্থিতা বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন জায়েদ খান। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন তার আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথী।সেই রিটের শুনানি নিয়ে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের আপিল বোর্ডের দেওয়া সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। এক সপ্তাহের মধ্যে মামলার বিবাদীদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়। বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব আদেশ দেন। পরে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে গত ৮ ফেব্রুয়ারি আপিল আবেদন জানান নিপুণ আক্তার। আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে শুনানির পর গত ৯ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে আদেশ দেন আদালত।
চেম্বার আদালত বাংলাদেশ শিল্পী সমিতি নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন। একইসঙ্গে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি নিপুন আক্তারের আবেদনের ওপর আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির দিন নির্ধারণ করেন। পাশাপাশি গত ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে কেউ দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না বলেও আদালত তার আদেশে জানিয়েছিলেন।
এরপর গত ১৪ ফেব্রুয়ারি মামলাটি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি হয়। শুনানি শেষে চেম্বার আদালতের আদেশ বহাল রেখে হাইকোর্টকে রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ। তবে আপিল বিভাগের আদেশ অমান্য করে নিপুণের বিরুদ্ধে সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসার অভিযোগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি আদালত অবমাননার মামলা করেন জায়েদ খান।
এদিকে, জায়েদ খানের রিট মামলায় তার প্রার্থীতা ফিরিয়ে দিয়ে গত ২ মার্চ হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করেন। পরে নিপুণ আক্তার আপিল দায়ের করলে হাইকোর্টের রায় চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত ও স্থিতিবস্থা জারি করে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য প্রেরণ করেন চেম্বার জজ আদালত।