বিনোদন

শিল্পী সমিতির নির্বাচন কমিশনারকে মিশার চিঠি

বেশ আগে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলেও সম্প্রতি তা পিছিয়ে নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়। ১৯ এপ্রিল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তা পরিবর্তন করে ২৭ এপ্রিল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনারের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম খসরু। নতুন এই তারিখ ঘোষণায় বিস্মিত গত দুই মেয়াদের সাবেক সভাপতি মিশা সওদাগর। নতুন তারিখের ফলে আর্থিক ক্ষতিসহ বহু সমস্যার মোকাবেলা করতে হবে জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর চিঠি দিয়েছেন এই অভিনেতা।

চিঠিতে মিশা সওদাগর উল্লেখ করেছেন— ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১৯ এপ্রিল ২০২৪-২৬ মেয়াদে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। সে অনুযায়ী ইতোমধ্যেই আমরা নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণের জন্য একটি প্যানেলের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। কিন্তু কার্যনির্বাহী পরিষদের কোনো সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত ব্যতীত আকস্মিকভাবে নির্বাচনের তারিখ পিছিয়ে বিজ্ঞ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক গত ৪ মার্চ, ২০২৪ তারিখে স্বাক্ষরিত ও ঘোষিত তফশিল দেখে আমরা বিস্মিত হয়েছি।’

তফসিলে গঠনতান্ত্রিক নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছে উল্লেখ করে এই অভিনেতা চিঠিতে আরো লেখেন, ‘তফসিলে তারিখ পরিবর্তনে কার্যনির্বাহী পরিষদের কোনো সভার সিদ্ধান্তের উল্লেখ না থাকা, এমনকি তফসিলে সম্মানিত সভাপতিরও কোনো স্বাক্ষর না থাকায় সাংগঠনিক ও গঠনতান্ত্রিক নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছে বলে সাধারণ সদস্যগণসহ আমরা মনে করছি।’

আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা জানিয়ে মিশা সওদাগর লেখেন, ‘তদুপরি আমরা পেশায় অভিনয়শিল্পী হিসেবে কার্যনির্বাহী পরিষদ ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী ইতোমধ্যেই বিভিন্ন চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিচালককে শুটিং ডাবিং-এর শিডিউলও প্রদান করেছি এবং সে অনুযায়ী নির্বাচনের শিডিউলও স্থির করেছি। উপরোক্ত কারণে তফসিল পেছালে আমাদের আর্থিক ক্ষতিসহ বহু সমস্যার মোকাবেলা করতে হবে।’

নির্বাচন কমিশনারের চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানিয়ে মিশা চিঠিতে লেখেন, ‘বিষয়টির সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করে কার্যনির্বাহী পরিষদের ঘোষণার প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও নির্বাচনে আমাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের লক্ষ্যে নির্বাচনের তারিখ অপরিবর্তিত রেখে সংশোধিত তফসিল ঘোষণার জন্য সবিনয় অনুরোধ জানাচ্ছি।’

এ প্রসঙ্গে শিল্পী সমিতির প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘মিশাসহ আরো কয়েকজনের আবেদন পেয়েছি। অনেকেই বিদেশ যাবেন এবং ঈদের পর নির্বাচন দেয়ার কথা জানিয়েছেন। কয়েক দিনের মধ্যে মিটিং করে আমরা একটা সিদ্ধান্ত নেব।’

এবারের নির্বাচনে মিশা সওদাগর (সভাপতি পদপ্রার্থী) ও মনোয়ার হোসেন ডিপজল (সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী) থাকবেন এক প্যানেলে। অন্যদিকে, ভোটের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিদায়ী কমিটির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন। সে কারণে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী নিপুণ আক্তার। নিজের প্যানেলের সভাপতির খোঁজে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন তিনি।

সম্প্রতি অনন্ত জলিলের একটি বক্তব্য ঘিরে সমালোচনার মুখে পড়েন প্রধান নির্বাচন কমিশনার খোরশেদ আলম খসরু ও আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান শামসুল আলম। অনন্ত জানান, শিল্পী সমিতির নির্বাচনে তাকে সভাপতি পদে নির্বাচনের প্রস্তাব দেন নিপুণ, সঙ্গে প্রযোজক মোহাম্মদ ইকবাল, খোরশেদ আলম খসরু, সামসুল আলম প্রমুখ।

মূলত, অনন্তের এমন বক্তব্যের পরই সমালোচনার মুখে পড়েন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। এর পরে খসরু বলেন, ‘আসলে এই ঘটনা অনেক আগের। তখনো আমি নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পাইনি। ফলে এটা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। এখন আমি দায়িত্বপ্রাপ্ত। সুতরাং নিরপেক্ষ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’