ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্বর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, চুক্তি ভঙ্গ ও শিডিউল ফাঁসানোর অভিযোগ এনেছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আলফা আই স্টুডিওস লিমিটেড।
প্রতিষ্ঠানটির ২৪টি নাটকে অভিনয়ের জন্য ৫০ লাখ টাকায় চুক্তিবদ্ধ হন অপূর্ব। এরপর মাত্র ৯টি নাটকের কাজ করে তেত্রিশ লাখ টাকা নিয়ে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তিনি। এরপর প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটি আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ এনে টেলিভিশন অ্যান্ড ডিজিটাল প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টেলিপ্যাব) এবং অভিনয়শিল্পী সংঘের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন আলফা আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার করিম ভূঁইয়া (শাহরিয়ার শাকিল)।
গত ১১ মার্চ অভিযোগ করেন শাকিল। তার স্বাক্ষরিত অপূর্বর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগে বলা হয়েছে— আলফা আই স্টুডিওস লিমিটেড (প্রতিনিধিত্বে উহার ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার করিম ভূঁইয়া) এবং অভিনয়শিল্পী মো. জিয়াউল ফারুক অপূর্বর মধ্যে ১৬-১০-২০২২ তারিখে একটি অভিনয় সংক্রান্ত চুক্তি সম্পাদিত হয়। উক্ত চুক্তি অনুযায়ী মো. জিয়াউল ফারুক অপূর্ব ১ নভেম্বর ২০২২ তারিখ হতে ৩১ অক্টোবর ২০২৩ পর্যন্ত আলফা আই স্টুডিওস লিমিটেডকে প্রতি মাসে ৩ দিন শিডিউল দিবেন এবং উক্ত ৩ দিনে ২টি নাটকের শুটিং হবে, যদি কোনো মাসে ৩ দিন শুটিং করার শিডিউল দিতে না পারেন তবে পরবর্তী মাসের সাথে মো. জিয়াউল ফারুক অপূর্ব সমন্বয় করবেন।
উপরে উল্লিখিত চুক্তি অনুসারে ২৪টি নাটকে অভিনয়ের জন্য মোট ৫০ লাখ টাকায় চুক্তিবদ্ধ হয়ে ১৬.১০.২০২২ তারিখে (৫০%) ২৫ লাখ টাকা ও গত বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি এবং ১৯ ফেব্রুয়ারি ভিন্ন ভিন্ন ৪টি ভাউচারে অগ্রিম বাবদ আরো ৮ লাখ টাকা গ্রহণ করেন অপূর্ব। চুক্তি অনুযায়ী, ২৪টি কাজের মধ্যে ৯টি কাজ কোনোভাবে সম্পন্ন করলেও বাকি ১৫টি কাজের নানা ধরনের টালবাহানা ও কালক্ষেপণ করতে থাকেন।
অনেক কালক্ষেপণের পর চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি শুটিংয়ের শিডিউল দেন অপূর্ব। সেই অনুযায়ী, আলফা আই স্টুডিওস লিমিটেড শুটিংয়ের সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন। তবে তার দেয়া নির্ধারিত তারিখে শুটিংয়ে আসেননি অপূর্ব। পরবর্তীতে সকল ধরনের যোগাযোগ করা থেকে বিরত থাকেন। উল্লিখিত চুক্তি মোতাবেক মো. জিয়াউল ফারুক অপূর্ব আলফা আই স্টুডিওস লিমিটেডের নিকট থেকে নগদ ৩৩ লাখ টাকা গ্রহণ করার পরেও ১৫টি নাটকে অভিনয় না করায় এবং সব ধরনের যোগাযোগ থেকে বিরত থাকায় আলফা আই স্টুডিওস লিমিটেড ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি এবং ব্যবসায়িক সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে বলে অভিযোগপত্রে দাবি করা হয়।
আরো পড়ুন: অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ, মুখ খুললেন অপূর্ব
এ পরিস্থিতিতে গত ৩ মার্চ অভিনেতার বিরুদ্ধে ৭ দিনের সময় বেঁধে দিয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠায় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সময় অতিক্রম হলেও যোগাযোগ করেননি অপূর্ব। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ানোর আগেই সংগঠনকে অবগত করেন সমাধানের জন্য।
টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টেলিপ্যাব) সাধারণ সম্পাদক সাজু মুনতাসিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে অভিযোগটি পেয়েছেন বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে সাজু মুনতাসির বলেন, ‘আমরা খুব দ্রুত একটি মিটিং করে দুই পক্ষকে ডেকে বিষয়টি জানব। বিষয়টি সাংগঠনিকভাবেই দেখা হবে।’
তবে এ অভিযোগ প্রসঙ্গে অভিনয়শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসান মন্তব্য করতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেন। এ প্রসঙ্গে কথা বলতে অপূর্বর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সাড়া দেননি তিনি।