বিনোদন

ব্যথা গিলতে গিলতে মানুষ অন্যের ব্যথা অনুভব করতে পারে: অপরাজিতা

প্রত্যেক মানুষের জীবনই একেকটা বই, জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত বইয়ের একেকটা পাতা। এসব পৃষ্ঠায় লেখা থাকে জীবনেরই গল্প। স্বভাবতই মানুষ তার জীবনের বইটি পুরোপুরি খুলে রাখেন না, যার ফলে অনেক গল্পই আড়ালে থেকে যায়।

ভারতীয় টিভি ও বড় পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য। পর্দায় নানা চরিত্রে দেখা গেছে তাকে। বাস্তবে দারুণ হাসি-খুশি জীবনযাপন করে থাকেন তিনি। কিন্তু তারও জীবনের অনেক গল্প, অনুভূতি আড়ালে পড়ে আছে। আড়ালে রাখা কিছু অনুভূতি এবার প্রকাশ করলেন এই অভিনেত্রী।

অপরাজিতা আঢ্য তার ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। তাতে অভিজ্ঞতা ও অনুভূতির বাস্তব একটি চিত্র তুলে ধরেছেন। লেখার শুরুতে এ অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, যারা প্রবলভাবে ঠকে, তারা কোনোদিন কাউকে ঠকাতে পারে না। বড়জোর বিশ্বাস করা ছেড়ে দেয়। আমি বিশ্বাস করি, যারা ধ্বংস হয়, তারা কোনোদিন কাউকে নিঃস্ব করতে পারে না। বড়জোর হারিয়ে দিতে শিখে যায়, জীবন শিখিয়ে দেয়। কিন্তু ধ্বংস করতে পারে না।’

যে মানুষের কথা বলার কেউ থাকে না, তারাই অন্যের কথা শোনে। এ তথ্য উল্লেখ করে অপরাজিতা আঢ্য বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, যারা চরমভাবে অপেক্ষা করতে জানে, তারা কখনো কাউকে উপেক্ষা করতে পারে না। বড়জোর তারা সবকিছু সম্পর্কে উদাসীন হতে শিখে যায়, তাদের উপর আর কোনোকিছুই কোনো প্রভাব ফেলতে পারে না। যাদের কথা বলার কেউ থাকে না, তারাই অন্যের কথা মন দিয়ে শোনে।’

‘সম্পর্ক যাদের ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়ে গেছে, তারা কোনোদিন কোনো সম্পর্ক ভাঙতে পারে না। বরঞ্চ কোনো সম্পর্কে তারা আর জড়ায় না। যারা ভীষণভাবে নিজের ভালোবাসার মানুষের কাছে অবহেলা পায়, তারা অন্য কাউকে অবহেলা করে না কক্ষনো। বরং বলা ভালো, খুব সুন্দরভাবে সবকিছু এড়িয়ে যেতে শিখে যায় তারা।’ বলেন অপরাজিতা আঢ্য।

মানুষ ব্যথা গিলতে গিলতে অন্যের ব্যথা অনুভব করেন বলে মনে করেন অপরাজিতা আঢ্য। তার ভাষায়— ‘যাদের নিজস্ব গন্ধ কমে এসেছে, তারাই প্রতিটা মানুষের বুকের খুব কাছাকাছি গন্ধটাকে চিনতে পারে। ব্যথা গিলতে গিলতে যাদের গোটা শরীরটা অবশ হয়ে এসেছে, তারাই একমাত্র অন্যের ব্যথা খুব ভালোভাবে অনুভব করতে পারে।’

মাত্র ১৯ বছর বয়সে টলিউডের সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার অতনু হাজরাকে বিয়ে করেন অপরাজিতা আঢ্য। পর্দায় বহুবার মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন অপরাজিতা। কিন্তু বিয়ের পর ২৭ বছর কেটে গেলেও এখনো সন্তানের মা হননি এই অভিনেত্রী। যদিও এ নিয়ে তার কোনো দুঃখবোধ নেই বলে জানিয়েছেন। হঠাৎ এ ধরনের পোস্ট কেন করেছেন, তার কোনো কারণ ব্যাখ্যা করেননি অপরাজিতা। তবে ভক্ত-অনুরাগী ও সহশিল্পীরা তার গভীর এই অনুভূতির লেখা পড়ে মুগ্ধতা প্রকাশ করেছেন কমেন্ট বক্সে।

১৯৯৮ সালে ‘শিমুল পারুল’ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় নাম লেখান অপরাজিতা। অভিনয় ক্যারিয়ারে অনেক জনপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো— ‘চুপ কথা’, ‘গয়নার বাক্স’, ‘ওপেনটি বায়োস্কোপ’, ‘বেলা শেষে’, ‘প্রাক্তন’, ‘সমান্তরাল’ প্রভৃতি।