অভিনেতা-নির্মাতা-সঞ্চালক শাহরিয়ার নাজিম জয়কে আসামি করে সম্প্রতি মামলা হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে এই মামলা দায়ের করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে গত ২৮ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক ভিডিও বার্তা দেন শাহরিয়ার নাজিম জয়। জয় লিখেছেন, ‘ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা না রাখতে পারার জন্য আমি নিঃশর্ত ক্ষমা চাই জাতির কাছে। ক্ষমার চেয়ে বড় গুণ আর কিছু নাই। আপনারা নিশ্চয়ই আমাকে ক্ষমা করবেন; সব শিল্পীর উচিত তার অবস্থান পরিষ্কার করা। আমার বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে তার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করলাম।’
ভিডিও বার্তায় জয় আরো বলেন, ‘আমার নামে মামলা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যাচেষ্টার মামলা। যেখানে আমাকে আসামি করা হয়েছে। আমি মামলার এজাহার পড়েছি, যেখানে লেখা আছে—২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টায় অনেকের সঙ্গে আমিও ছিলাম। বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িতে হামলা করেছি, তাকে হত্যার চেষ্টা করেছি।’
আত্মপক্ষ সমর্থনে জয় বলেন, ‘আমার কাছে সব প্রমাণ আছে, মামলায় উল্লেখিত ১৫ এপ্রিল আমি শুটিংয়ের কাজে নেপালে ছিলাম। আমার পাসপোর্টেও বিষয়টি উল্লেখ আছে। সেদিন সকাল ১১টার ফ্লাইটে নেপালে যাই। সেসময় নেপালে একটি বড় ভূমিকম্প হয়। যে ভূমিকম্পে আমি, রুনা খানসহ অনেক তারকা আটকা পড়ি। এরপর ২৬ এপ্রিল আমরা দেশে ফিরে আসি। সেই কাগজপত্রগুলো আমার কাছে সব আছে।’
বাস্তবতার বিপরীতে এমন মামলার আসামি হয়ে অনেকটাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন জয়। তার ভাষায়, ‘খুব দুঃখ পেয়েছি। জীবনে কখনও কাউকে গায়ে হাত দেওয়ার সাহস পাইনি। কারও সঙ্গে ঝগড়া বিবাদেও যাইনি। সেখানে এমন একটি ঘটনায় আমি মর্মাহত। আমার পরিবারের মানুষ চিন্তিত হয়ে পড়েছে।’
ভিডিও বার্তায় জয়কে বলতে শোনা যায়, এক সমন্বয়ককে নিজেদের (শিল্পীদের) সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি খুব সুস্পষ্টভাবে বলেন, আপনাদের মাঝে অনেক শিল্পী রয়েছেন যারা অন্যায় করেছেন। আপনারা আন্দোলনের সময় ছাত্রদের এ আন্দোলনকে সরকারের হয়ে (আওয়ামী লীগ সরকার) অন্যভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন। অনেক রকম পোস্ট করেছেন এ আন্দোলনকে থামানোর, দমানোর। চেষ্টা করেছেন সরকারকে সহযোগিতা করার, সুবিধাভোগী হওয়ার। আপনারা বাংলাদেশ টেলিভিশনে গিয়ে কেঁদেছেন অনেকেই। অথচ হাজার হাজার স্টুডেন্ট রাস্তায় গুলি খেয়ে মারা গেছেন, কত মায়ের কোল খালি হয়েছে। অনেকেই তা বোঝেনি সরকারের চামচামি করেছে। সবসময় আপনারা মানুষের তোপের মুখে থাকবেন, ঘৃণার মুখে থাকবেন।
ওই সমন্বয়কের বরাত দিয়ে জয় আরও বলেনে, আপনারা শিল্পী, যাদেরকে মানুষ ভালোবাসে। আপনারা আপনাদের সংগঠন হোক, শিল্পী সমাজ হোক, সকলে একত্রিত হয়ে আপনারা জাতির কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন, ক্ষমা চান। ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আপনাদের আসলে আর কোনো পথ নেই।
মূলত ওই সমন্বয়কের এমন মন্তব্যের কারণেই নিজের ভুল বুঝতে পেরে জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন জয়। পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় যারা চুপ ছিলেন সেই সব শিল্পীদেরও নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করা উচিত বলে মনে করেন এই অভিনেতা।