কয়েক বছর আগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে একটি অনুষ্ঠানে নায়িকা মৌসুমীর তোলা ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। সেসময় ছবিটি নিয়ে দারুণ সমালোচনা হয়। কিন্তু তারকা দম্পতি ওমর সানী ও মৌসুমীর কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
ছবিটি মৌসুমীর জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের শাসন আমলে এই ছবির কারণে মৌসুমীকে একাধিকবার রোষানলে পড়তে হয়েছে বলে দাবি ওমর সানীর। হাসিনা সরকারের পতনের পর ঘটনাটি নিয়ে প্রথমবার মুখ খুললেন মৌসুমীর বর।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এফডিসির প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতিতে নবগঠিত সেন্সর বোর্ডের সংস্কারের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে এক প্রশ্নের জবাবে ওমর সানী বলেন, ‘ওই ছবিতে এক পাশে ববিতা আপা ছিলেন, এক পাশে মান্না ভাইও ছিলেন। সেখানে তারেক সাহেব ও তার স্ত্রী কবুতর উড়িয়ে দিচ্ছিলেন। মৌসুমীও সেখানে ছিলেন।’
ছবিটি ভাইরাল হওয়ার পর আওয়ামী লীগ সরকারের লোকজন তার ব্যবসার ক্ষতি করতে মেতে উঠে। তা জানিয়ে ওমর সানী বলেন, ‘বেনজীর তখন র্যাবের প্রধান ছিলেন। নারায়ণগঞ্জে দেখা হলে একদিন তিনি বলেছিলেন, তাদের কাছে নির্দেশ আছে, ছবিটি নাকি বিতর্কিত। আমরা বাজে অবস্থার মধ্যে পড়ে যাব। তখন আমি আমার পরিবার নিয়ে ভীত হয়ে পড়ি। তারপর থেকে আমার পরিবার ও ব্যবসার ওপর অস্বাভাবিকভাবে তারা (আওয়ামী লীগ সরকার) ক্ষতি করতে মেতে ওঠে। শুধু আমি একা নই, আমার কাছের মানুষগুলোও জানে কতটা ব্যথিত হয়েছিলাম’
রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে শিল্পীদের ছবি থাকার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে ওমর সানী বলেন, ‘পরিষ্কার করে বলতে চাই, রাষ্ট্র যেখানে অবস্থান করবে, প্রজারা সেখানে অবস্থান করতে বাধ্য। শিল্পীদের সঙ্গে যে কারো ছবি থাকতে পারে। একজন চোরের সঙ্গে বা ব্রোথেল গার্লের সঙ্গেও ছবি থাকতে পারে। তবে হ্যাঁ, এটা সত্য মৌসুমী নমিনেশন (সংরক্ষিত মহিলা আসন, ২০১৮ সালের নির্বাচন) চেয়েছিল। কেন চেয়েছিল সেটা জাহির করতে আসিনি। এটা ওপর ওয়ালা ভালো জানেন। মৌসুমী রাজনীতিতে জড়াবে না বলেই একটা সময় আমেরিকা চলে যায়। এখনো সেখানেই রয়েছে।’
এফডিসির শিল্পী সমিতির গুটি কয়েক নেতাকে ‘কুলাঙ্গার’ উল্লেখ করে ওমর সানী বলেন, ‘সেই কুলাঙ্গারদের কারণে প্রথমবার নির্বাচন করতে এসে দেখি তারা শাকিবের সঙ্গে কী করেছিল। শাকিব মামলা করেছিল। এই কুলাঙ্গারদের কারণে শাকিব সেই মামলা আগাতে পারে নাই। যারা এসবে প্রভাব খাটিয়েছিল, অনেকে কারাবন্দি। মৌসুমী যখন সমিতির নির্বাচন করে, তারা অনেকে এখন আছে, যারা পেছন থেকে তার ক্ষতি করেছিল।’
বরেণ্য অভিনয়শিল্পীদের একুশে পদক দেওয়ার দাবি জানিয়ে ওমর সানী বলেন, ‘শবনম ম্যাডাম, শাবানা ম্যাডাম, ববিতা ম্যাডামদের মতো লিজেন্ড যারা আছেন, তাদের যথাযথ মূল্যায়ন হচ্ছে না। তারা এক জীবনের পুরোটা এই অঙ্গনে দিয়েছেন। রাষ্ট্রের উচিত তাদের একুশে পদক পুরস্কার দিয়ে সম্মান জানানো।’