বাংলা গানের প্রয়াত সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোর। ২০২০ সালের ৬ জুলাই পরপারে পাড়ি জমান এই কিংবদন্তি শিল্পী। জীবদ্দশায় ১৫ হাজারের বেশি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। তার গাওয়া কালজয়ী গানের সংখ্যাও কম নয়।
প্লেব্যাক সম্রাট এন্ড্রু কিশোরের সহশিল্পী ছিলেন শ্রোতাপ্রিয় সংগীতশিল্পী কনক চাঁপা। জুটি বেঁধে তারা বহু গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। সোমবার (৪ নভেম্বর) ছিল এন্ড্রু কিশোরের জন্মদিন। এ উপলক্ষে প্রিয় শিল্পী, প্রিয় সহকর্মীকে স্মরণ করেছেন কনক চাঁপা।
কনক চাঁপা তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। লেখার শুরুতে এ শিল্পী বলেন, ‘আমাদের এন্ড্রু কিশোর। আমি বলি, গলিত সোনার নহর। তিনি দৈহিকভাবে কত বছর হয় চলে গেছেন আমি তা গুনি না। ভাবতেই ভালো লাগে না যে তিনি নেই।’
চলচ্চিত্রের গানে এন্ড্রু কিশোরের দীর্ঘ চার দশকের বেশি সময়ের ক্যারিয়ার ছিল। দীর্ঘ সংগীত ক্যারিয়ারে বহু চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। আর সেসব গানে বেঁচে আছেন তিনি। এ বিষয়ে কনক চাঁপা বলেন, ‘তার গান আকাশ, বাতাস, পাতাল, নদী, সাগরে ভাসে। আমার তো মনে হয় পৃথিবীর আনাচেকানাচে যেখানেই বাংলা ভাষাভাষী আছেন, সেখানেই প্রতি সেকেন্ডে কারো না কারো কাছে তার গান বাজে, কেউ গায়, কেউ গুনগুন করে, কেউ শেখার চেষ্টা করে, কেউ তাকে, কেউ তার গান, তার কণ্ঠ নিয়ে গবেষণা করে।’
এন্ড্রু কিশোরের অনুপস্থিতি বিষণ্ন করে কনক চাঁপাকে। তা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি ভাবতেই চাই না তিনি নেই। তবুও আমি মানুষ! তার অনুপস্থিতি আমাকে বিষণ্ন করে। হঠাৎ আনমনা হয়ে ভাবি, একদিন ওনাকে মজার রান্না করে খাওয়াব, পরক্ষণেই সম্বিত ফিরে পাই, বাস্তবে ফিরে এসে বুঝি তিনি নেই এবং কী হারালাম!’
কিছু প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে কনক চাঁপা বলেন, “আবারো বলি আমাদের একজন কিশোরদা ছিলেন, যিনি আমাদের অনেক দিয়েছেন কিন্তু আমরা কি তাকে সঠিক সম্মান দিয়েছি? স্টেডিয়ামে বিশাল করে একটা এন্ড্রু কিশোর নাইট করে রাতভর তার গান পেটভরে, হৃদয় ভরে শুনেছি! এখন কোটিবার উচ্চারণ হয় ‘বড্ড অপূরণীয় ক্ষতি’ হয়ে গেল! তাতে তার আর কিছুই আসে যায় না। যায় কি?”
১৯৫৫ সালের ৪ নভেম্বর রাজশাহীতে জন্মগ্রহণ করেন এন্ড্রু কিশোর। সেখানেই কেটেছে তার দুরন্ত শৈশব ও কৈশোর। বেঁচে থাকলে সত্তর বছরে পা দিতেন এই শিল্পী।