ভারতের দক্ষিণী সিনেমার তারকা অভিনেতা ধানুশ। ব্যক্তিগত জীবনে পরিচালক-গায়িকা ঐশ্বরিয়া রজনীকান্তের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন। কয়েক বছর আগে ১৮ বছরের সংসার জীবনের ইতি টানার ঘোষণা দেন। গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে আলাদা হয়ে গেছেন এই জুটি। তাদের প্রেম ও বিচ্ছেদের গল্প নিয়ে এই প্রতিবেদন।
প্রথম দৃষ্টি বিনিময় ধানুশ অভিনীত দ্বিতীয় সিনেমা ‘কাদাল কোন্দেইন’। এটি ২০০৩ সালে মুক্তি পায়। সিনেমাটির প্রদর্শনীতে প্রথম দেখা হয় ধানুশ ও ঐশ্বরিয়া রজনীকান্তের। পরিবারের সঙ্গে এ সিনেমার প্রদর্শনীতে গিয়েছিলেন ধানুশ। আর এই প্রদর্শনীতে আমন্ত্রিত ছিলেন সুপারস্টার রজনীকান্ত। বরেণ্য এই অভিনেতা তার দুই মেয়েকে নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। সেখানে ঐশ্বরিয়া ও সৌন্দর্যের সঙ্গে ধানুশের পরিচয় করান রজনীকান্ত। সেই সময়ে প্রথম ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে সৌজন্যমূলক কথা বলেন ধানুশ।
ধানুশকে ঐশ্বরিয়ার ফুল ও চিরকুট ‘কাদাল কোন্দেইন’ সিনেমার প্রদর্শনীতে ধানুশ-ঐশ্বরিয়ার সৌজন্যমূলক কথা হয়েছিল। এরপর যে যার মতো চলে যান। পরে রজনীকান্ত কন্যা এই অভিনেতাকে একটি ফুলের তোড়া উপহার পাঠান। এর সঙ্গে ছিল একটি চিরকুট। এতে লেখা ছিল, ‘ভালো কাজ।’ ঐশ্বরিয়ার এই মন্তব্য অনেক ভালো লেগেছিল ধানুশের।
ধানুশ-ঐশ্বরিয়ার প্রণয় ঐশ্বরিয়া রজনীকান্ত ছিলেন ধানুশের বোনের বন্ধু ছিলেন। যার ফলে প্রায়ই তাদের দেখা হতো। ধীরে ধীরে তাদের বন্ধুত্ব বাড়তে থাকে। এক সময় তাদের মধ্যে প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই জুটির ঘনিষ্ঠতা মিডিয়ারও নজরে আসে। কারণ সেই সময় জনপ্রিয়তার কারণে ধানুশ বেশ আলোচনায় ছিলেন। তাই তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও মিডিয়ার কৌতূহল ছিল। তা ছাড়া ঐশ্বরিয়া ছিলেন রজনীকান্তের মেয়ে সেটিও একটি কারণ ছিল। নিয়মিত তাদের প্রেম নিয়ে মিডিয়ায় চর্চা হতে থাকে।
প্রেমের কাঁটা বয়স প্রেমের পথে বাধা আসবে না এমন নজির পৃথিবীতে খুবই কম। ধানুশ-ঐশ্বরিয়ার প্রেমের পথেও কাঁটা ছিল। এ জুটির প্রেমে প্রথম কাঁটা ছিল তাদের বয়স। এর জন্য সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছিলেন তারা। কারণ সেসময়ে ধানুশেন বয়স ছিল ২১, অন্যদিকে ঐশ্বরিয়ার ২৩ বছর। এ নিয়ে মিডিয়ায় চর্চা শুরু হলে তাদের দু’জনের পরিবারই অনেক চটেছিল।
ধানুশ-ঐশ্বরিয়ার পরিণয় সব সংকট কাটিয়ে ধানুশ-ঐশ্বরিয়ার ভালোবাসারই জয় হয়। ২০০৪ সালের ১৮ নভেম্বর পরিবারের সম্মতিতে ধানুশ ও ঐশ্বরিয়া রজনীকান্তের বিয়ে হয়। ২০০৬ সালে বড় ছেলে যাত্রার জন্ম হয়। দ্বিতীয় সন্তান লিঙ্গা পৃথিবীতে আসে ২০১০ সালে।
বিচ্ছেদের ঘোষণা ২০২২ সালের শুরুতে ১৮ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টানার ঘোষণা দেন ধানুশ-ঐশ্বরিয়া। মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে (টুইটার) ডিভোর্সের ঘোষণা দিয়ে এক বিবৃতিতে ধানুশ লেখেন, ‘১৮ বছর একসঙ্গে বন্ধু, দম্পতি, মা-বাবা ও শুভাকাঙ্ক্ষী হয়ে ছিলাম। উন্নতি, পরস্পরের প্রতি বোঝাপড়া, মানিয়ে নেওয়া, আয়ত্ত্ব করার একটা জার্নি ছিল। আজ এমন এক জায়গায় দাঁড়িয়ে যেখানে আমাদের পথ আলাদা হয়ে গেছে। ঐশ্বরিয়া ও আমি দাম্পত্য জীবনের ইতি টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নিজেদেরকে আরো ভালোভাবে বোঝার জন্য সময় নিচ্ছি।’