বিনোদন

‘হিন্দু-মুসলিম’ ইস্যু নিয়ে হেনস্তা, ফেসবুক পোস্ট মুছতে বাধ্য হলেন গায়িকা

কয়েক দিন আগে সাবেক ইসকন নেতা ও সনাতন সম্মিলিত জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে। এ হাওয়া লেগেছে পড়শি দেশ ভারতেও। এ পরিস্থিতিতে ‘হিন্দু-মুসলিম’ সম্পর্ক নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ট্যাটাস দেন ওপার বাংলা গায়িকা লগ্নজিতা চক্রবর্তী। এরপর নিজ দেশে রীতিমতো হেনস্তার শিকার হন ‘বসন্ত এসে গেছে’খ্যাত এই গায়িকা। তারপর বাধ্য হয়ে সমস্ত পোস্ট মুছে ফেললেন লগ্নজিতা।

লগ্নজিতা চক্রবর্তী তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে লেখেন, “ভেবেছিলাম এই হিন্দু মুসলিমের ব্যাপারটা আমরা পেরিয়ে এসেছি, অনেক দিন/বছর/কাল আগেই। কোনোদিন ভাবিনি ২০২৪ সালে দাঁড়িয়ে, এই বিষয়টা নিয়ে একটা পোস্ট করতে হবে। এটা অতীত হয়ে গিয়েছে, এই আমার ভাবনা ও চিন্তা ছিল।”

এ পোস্ট দেওয়ার পর ট্রলের শিকার হন লগ্নজিতা। অনেকে গালাগাল করতে শুরু করেন। এরপর ফের একটি পোস্ট দেন এই শিল্পী। তাতে তিনি লেখেন, “অনেকে বলছেন, এই যে আমার হিন্দু মুসলিম নিয়ে ভাগ করতে ইচ্ছে করে না/করছে না; এটার কারণ নাকি সিপিএমের ৩৪ বছরের শাসন, আমি নাকি কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গ এবং ভারতে কী হয় কিছুই জানি না, আমি নাকি খুবই অশিক্ষিত, আমার আরো শিক্ষিত হওয়া উচিত ছিল ইত্যাদি ইত্যাদি।”

এরপর গালমন্দ করা নেটিজেনদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে লগ্নজিতা চক্রবর্তী লেখেন, “সে তো বুঝলাম। কিন্তু আমি তো হিন্দু-মুসলিম যে ভাই-ভাই, এটা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম এনাদের থেকে শিখেছিলাম। তো রবীন্দ্রনাথ আর নজরুলও কি সিপিএম ছিলেন? জাস্ট জানতে চাইছি।”

“যদি আসল স্ট্যান্ড নেন, তাহলে বাংলাদেশে গিয়ে গান গাইতে হবে না”— নেটিজেনদের অনেকে এমন মন্তব্য করেন লগ্নজিতা। এর জবাবে এ গায়িকা লেখেন, “শুনুন, থ্রেট শুনে শুনে আজকাল থ্রেটেরও বোর (বিরক্ত) লাগে। যেকোনো জিনিস একঘেয়ে হয়ে গেলে যা হয় আরকি। আমি তো আপনার অফিস যাওয়া নিয়ে কিছু বলছি না। আমার গান গাওয়া নিয়ে আপনার এত সমস্যা কোথায়?”

লগ্নজিতার এসব পোস্ট এখন আর সোশ্যাল মিডিয়ায় নেই। বাধ্য হয়ে মুছে ফেলেছেন। এ তথ্য জানিয়ে লগ্নজিতা আরেক পোস্টে লেখেন, “আমার পরিবার (ব্যক্তিগত জীবন) এবং আমার ব্যান্ডের (পেশাগত জীবন) কাতর অনুরোধে, তাদের যাতে আর অসম্মান না হয়, আমি আমার সমস্ত পোস্ট ডিলিট করে নিতে বাধ্য হলাম। আমি হেরে গেলাম। আনন্দ করুন।”