উদ্যোক্তা/ই-কমার্স

অনলাইন-অফলাইনে সফল উদ্যোক্তা সায়মা

সাফল্য এবং জনপ্রিয়তা যেন প্রতিযোগিতা করেই পিছু ছুটছে তাঁর। একাধারে তিনি একজন উদ্যোক্তা, একজন ব্র্যান্ড প্রমোটর ও তুমুল জনপ্রিয় ব্লগার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে অনুসরণ করেন সাড়ে ৬ লাখেরও বেশি মানুষ। গল্পটা বন্দরনগরী চট্টগ্রামের তরুণী ও উদ্যোক্তা সানজিদা ইসলাম সায়মার। 

ব্র্যান্ড প্রমোটর এবং ব্লগার হিসেবে সায়মার যাত্রা শুরু ২০২১ সালে। সময় গড়িয়েছে মাত্র দুই বছর। এই সময়েই তিনি অনলাইন প্লাটফর্মে সমগ্র চট্টগ্রামে ছাড়িয়ে গেছেন সবাইকে। তিনি কাজ করছেন দেশের বড় বড় ব্র্যান্ডের সঙ্গে। পাশাপাশি চট্টগ্রামের অনলাইন ভিত্তিক উদ্যোক্তাদের জন্য তৈরি করে দিয়েছেন তাদের পণ্য বিক্রির অফলাইন ঠিকানা। যেখানে অনলাইন উদ্যোক্তারা প্রতিমাসে মাত্র ২ থেকে ৩ হাজার টাকা খরচ করে তাদের পণ্য অফলাইন শো-রুমের মাধ্যমে বিক্রির সুযোগ পাচ্ছেন। সায়মার এই উদ্যোগ অনলাইন উদ্যোক্তাদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ ও গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করেছে। 

রাইজিংবিডিকে সায়মা জানান, মূলত ২০১৭ সাল থেকেই তিনি ইনস্টাগ্রাম একাউন্টের মাধ্যমে অনলাইন এক্টিভিটির সঙ্গে যুক্ত হন। এর পর থেকেই মূলত পরিচিতি তৈরি হতে থাকে। ২০২১ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে ব্লগিং ও ব্র্যান্ড প্রমোশনের কাজ শুরু করলে সায়মার জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র চট্টগ্রামে। ক্রমে এই জনপ্রিয়তা চট্টগ্রাম ছাড়িয়ে সারা দেশেই বিস্তৃত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সায়মা ব্র্যান্ড প্রমোটর হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন দেশের নামি ও বড় বড় ব্র্যান্ডের সঙ্গে। এদের মধ্যে রয়েছে মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিসেস প্রতিষ্ঠান ‘বিকাশ’, দেশের বড় ফুড ব্র্যান্ড ‘চিলক্স’, ‘দ্যা স্টেইক হাউজ’, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ‘ইনফিনিটি’, ‘এক্সপ্রেস মল’সহ আরও অসংখ্য প্রতিষ্ঠান। 

সানজিদা ইসলাম সায়মা নামেই রয়েছে তার ফেসবুক ভিত্তিক বিজনেস পেইজ। যেখানে অনুসারী সাড়ে ৬ লাখের বেশি। এছাড়া চট্টগ্রামের অনলাইন উদ্যোক্তাদের জন্য তৈরি করেছেন টিম (TEAM) নামের একটি প্রতিষ্ঠান। 

সায়মা বলেন, “আমাদের ‘টিম’ নামের এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চট্টগ্রামের অনেক জনপ্রিয় ও প্রতিষ্ঠিত অনলাইন উদ্যোক্তারা যুক্ত আছেন। আমরা এখানে পণ্য অফলাইনে প্রদর্শনী ও বিক্রির সুযোগ করে দিচ্ছি। চট্টগ্রামে দুই নম্বর গেইটস্থ এস এ টাওয়ারে রয়েছে টিম এর বড় শো-রুম ও প্রদর্শনী কেন্দ্র। এখানে মাসে নাম মাত্র খরচে উদ্যোক্তারা তাদের পণ্য প্রদর্শন এবং বিক্রির সুযাগ পাচ্ছেন। এর মাধ্যমে আমি যেমন সাফল্য পেয়েছি তেমনই স্বাবলম্বি হয়েছি। অন্য উদ্যোক্তাদেরও সফল হতে সহযোগিতা করছি।” 

সায়মা চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ সরকারি কলোনী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনী কলেজ থেকে এইচএসসি সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিবিএ অধ্যায়ন করছেন। উদ্যোক্তা, ব্র্যান্ড প্রমোটর, ব্লগার এবং শিক্ষার্থী ছাড়াও সায়মা একজন মা। অনেক দায়িত্ব ও বিস্তৃত কর্মপরিধির মধ্যেও সায়মা সাফল্যের সাথে সামলে নিচ্ছেন সবকিছুই। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে অনেকেই নেতিবাচক ও নারীদের হয়রানীর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন উল্লেখ করে সায়মা বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাফল্য ও জনপ্রিয়তার পেলেও খ্যাতির বিড়ম্বনাও কম পোহাতে হচ্ছে না। ফেসবুক ও টিকটকসহ বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ায় অসংখ্য ফেইক অ্যাকাউন্ট, ফেইক পেইজ খুলে অনেকেই অনৈতিকভাবে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারীদের প্রতিনিয়ত নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হচ্ছে।’ এ ব্যাপারে সরকারের সাইবার সিকিউরিটি বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।