উদ্যোক্তা/ই-কমার্স

মা-মেয়ের কেক কোর্টের সফলতা

ব্রোকেন পরিবারের সন্তানেরা বাবা মা যেকোন একজনকে কাছে পায়। আশরা মাকে কাছে পেয়েছে। তাই তার জীবনে এগিয়ে চলার গল্পটাও মাকে নিয়েই। পুরো নাম মাহতারিন আশরা। তার বেড়ে ওঠা ঢাকার ডেমরায়। পড়াশোনা করছেন ইডেন মহিলা কলেজের অর্থনীতি বিভাগে। পড়াশোনার পাশাপাশি ছোট থেকেই অন্যরকম কিছু করতে চেষ্টা করতেন আশরা। পরিচিত একজনের কেক বানানো দেখে নিজেও কেক বানানো শেখার জন্য উদ্যোগী হন। বন্ধুদের সঙ্গে মিলে একটি কোর্স করেন।

২০২০ সালে শুরু করেন কেকের ব্যবসা। আশরার মা আসমা আক্তার কখনো ভাবেননি আশরা কেক বানাতে পারবেন। কিন্তু আশরা পেরেছেন। 

আশরা জানান, মাত্র ৮০০ টাকায় কেকের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান কিনে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। এরপর অনলাইনে খুলে বসেন ‘কেক কোর্ট’ নামের একটি পেজ। শুরুতে পরিচিতজনেরা আশরার পেজ থেকে কেক অর্ডার করতেন। এরপর পরিচিতি বাড়তে থাকে। একটি কেক বিক্রির টাকা দিয়ে নতুন নতুন উপাদান কিনে আবারো কেক বানিয়ে বিক্রি করতেন তিনি। ইউটিউব দেখে আশরা কেক বানানোর নতুন নতুন কৌশল আয়ত্ত করেছেন। ধীরে তার কেকের ক্রেতা বাড়ে। 

বিশেষ করে ইডেন ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের জন্মদিন এলেই কেকের অর্ডার আসে আশরার কাছে। আশরা বর্তমানে মাসে ২৫-৩০ হাজার টাকা আয় করে থাকেন। আশরার কাজে তাকে সবচেয়ে সাহায্য করেন তার মা। মায়ের অনুপ্রেরণা ও সাহায্যে আশরা আজ এতদূর এসে দাঁড়িয়েছেন। পরিবারের দায়িত্ব নিয়ে মাকে নিয়ে বেশ সুখে আছেন আশরা।

শুরুর দিকে আশরা এবং তার মা মিলে কেক ডেলিভারি করতেন বিভিন্ন জায়গায়। কেক ডেলিভারির জন্য অনেক সময় অনেকের কটু কথাও শুনতে হয়েছে তাদের।

কোনো কথা পাত্তা না দিয়েই এগিয়ে গিয়েছেন আশরা ও তার মা। তারা কেক কোর্ট নিয়ে আরও বিস্তৃত পরিসরে কাজ করার স্বপ্ন দেখেন।

নতুন উদ্যোক্তাদের নিয়ে আশরা বলেন, ‘নতুন উদ্যোক্তাদের দের জন্য আমার পরামর্শ থাকবে নিজের কমিউনিকেশন স্কিল ডেভেলপ করতে হবে। অনলাইনে বিজনেস করার ক্ষেত্রে কমিউনিকেশন স্কিল অনেক গুরুত্বপূর্ণ৷ মনে রাখা দরকার, যারা কাস্টমারদের যত ভালো ম্যানেজ করতে পারবে তারা তত সফলতা পাবে।’

আশরা নিজের সফলতার কারণ নিয়ে বলেন, ‘ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে পেরেছি আমার ব্যবহার দিয়ে৷ এবং সর্বপোরি যে পণ্য নিয়ে কাজ করি তার গুণগত মান অক্ষুণ্ণ রাখি।’

আশরা আরও বলেন সফলতা পেতে হলে পরিশ্রমী হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।