ফাগুনের মলাট

মেলায় আসিফ ইকবালের বই ‘টুকটুকি’

টুকটুকি লেখকের ভালোবাসা। জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমৃত‍্যু বয়ে বেড়ানো এক নাম । এভাবেই ভূমিকা লেখা হয়েছে গুচ্ছ গল্পের বই টুকটুকি’র। বইটি লিখেছেন কথাসাহিত্যিক আসিফ ইকবাল। বইটিতে ২৪টি ছোট গল্প সন্নিবেশ করা হয়েছে। প্রথম গল্প ‘২৬ ফেব্রুয়ারি’-তে ‘বাবুর আব্বু, আসার সময় একটা কেক নিয়ে আইসো, টুকির ম‍েসেজে অবাক হই। শুধু মেসেজ নয়, ফোন করেও কেক নিয়ে আসার অনুরোধ করেছিল। ৭/৮ বছরের সংসার জীবনে টুকি কখনোই এমন আবদার, কিংবা অনুরোধ করেনি। আজ কেন করলো? 

কিংবা ‘প্যাডলক-লাভলক’ গল্পে লেখা-‘আমার মন অস্থির। অথচ গোটা মেলবোর্ন উৎসব, উচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে। কখন যে সন্ধ‍্যা হয়েছে টেরই পাইনি। সুর্য হেলে পড়েছে। গোধূলি আলোয় ইয়ারার জল তখন মনোরম। ঘড়িতে যখন ৭টা, তখনই হোয়াটসঅ‍্যাপে ০১৯২...৭ নম্বর থেকে ফোন।  হ্যালো বলতেই- -আমার কথা ভাবছিলে, তাই না? অবাক হই। কীভাবে জানলো? -হু। - আমি জানি, আমার সোনা পাখিটা আমার কথাই ভাবছে। - কীভাবে জানলে? - টেলিপ‍্যাথি। কারণ আমিও যে তোমাকে গভীরভাবে ভাবছিলাম। এখন তুমিই বলো, আমার জানপাখি আমাকে না ভেবে কি পারে?’

এমন সব কথামালা দিয়ে সাজানো গল্পগুলো সাহিত‍্যের সকল শাখায় উত্তীর্ণ। লেখকের জীবন থেকে নেওয়া নির্মম সত‍্যবচনে সমৃদ্ধ এসব গল্প আমাদের সমকালীন সমাজে এক ধরনের অস্থিরতাকে ইঙ্গিত করে। জীবনে চাওয়া-পাওয়ার অসংগতি লেখকের তৃষ্ণার্ত মনকে ব‍্যাকুল করে তোলে।

নির্ভার ও সহজ কথায় আসিফ লিখেছেন গভীরতাগামী একগুচ্ছ গল্প। অথচ অপ্রয়োজনীয় বা অলংকরণের জন্য বাড়তি শব্দ ব‍্যবহার করেননি। একজন কথাসাহিত্যিকের লেখায় যতটুকু সাহিত‍্যগুন থাকা দরকার তার পুরোটা আসিফ ইকবালের মাঝে বিদ্যমান।