অন্য দুনিয়া

কক্সবাজারে তৈরি হচ্ছে পেট্রোল বোমা, জড়িত ৩৫০জন শনাক্ত

কক্সবাজার প্রতিনিধি : সারাদেশে চলমান আন্দোলনে ব্যাপক নাশকতার পরিকল্পনা নিয়ে কক্সবাজারে তৈরী করা হচ্ছে পেট্রোল বোমা ও ককটেল।

 

আর এ কাজে ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকে ব্যবহার করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রশাসনিকভাবে নাশকতায় জড়িত এবং পেট্টোল বোমা ও ককটেল তৈরির সঙ্গে জড়িতরা শনাক্ত হয়েছে।

 

প্রশাসনের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, জেলার আট উপজেলায় নাশকতায় জড়িত এবং পরিকল্পনাকারি হিসেবে মোট ৩৫০ জনকে চিহ্নিত করে একটি তালিকা করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বয়ে নাশকতাকারীদের এই তালিকা করা হয়েছে।

 

গোয়েন্দা তথ্য মতে, কক্সবাজার শহর ও শহরের আশ পাশের বেশ কয়েকটি বাড়িতে পেট্রোল বোমা ও ককটেল তৈরী হচ্ছে। একই সঙ্গে বানানোর প্রশিক্ষণও দেয়া হচ্ছে।

 

গোয়েন্দা সুত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার শহরের ঝাউতলা মসজিদের পাশে একটি বাসা, কক্সবাজার শহরের সাবমেরিন কেবল এলাকার একটি বাসা, শহরের নূর পাড়র দুটি বাড়িা এবং সদর উপজেলার পিএম খালির ছনখোলার এলাকায় একটি বাড়িতে চলছে বোমা ও ককটেল তৈরি ও প্রশিক্ষণ। এসব পেট্রোল বোমা কক্সবাজারে বিচ্ছিন্নভাবে নিক্ষেপ ছাড়াও দেশের বিভিন্নস্থানে প্রেরণ করা হচ্ছে।

 

গোয়েন্দা তথ্য মতে, কক্সবাজারে চলমান অবরোধে একাধিকবার পুলিশ ও সাধারণ নাগরিকদের লক্ষ্য করে পেট্টোল বোমা ও ককটেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। এ সব ঘটনায় ১০টির বেশি গাড়ি পেট্টোল বোমার আগুনে পুড়ে গেছে। এর মধ্যে গত ২১ জানুয়াররি শহরের পেট্রোল বোমাসহ দুইশিবির নেতা আটক হয়েছে।

 

১৮ জানুয়ারী কক্সবাজার সদর উপজেলা গেট এলাকায় বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপে হলে আল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকসহ ২০ জন। ৩ ফেব্রুয়ারী রামুর মিঠাছড়িতে একটি যাত্রীবাহী বাসে লক্ষ্য করে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে।

 

সর্বশেষ গত ৮ ফেব্রুয়ারী সদর উপজেলোর লিংকরোডে সোহাগ কমিউনিটি সেন্টারের সামনে ঢাকা গামী যাত্রীবাহী বাস লক্ষ্য করে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে। এছাড়াও চলমান অবরোধ ও হরতালে কক্সবাজার শহরে ও জেলার বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্ন ভাবে ১০টি স্থানে গাড়িতে ককটেল নিক্ষেপ ও আগুন দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

 

তাছাড়া চট্টগ্রামে বিভিন্ন অভিযানে পেট্রোল বোমাসহ যারা আটক হয়েছে তারা পুলিশকে জানিয়েছে এসব পেট্রোল বোমা কক্সবাজার থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে।

 

কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি দেওয়ান আবুল হোসেন রাইজিংবিডিকে জানান, কক্সবাজার জেলায় পেট্রোলবোমা ও ককটেল বানানোর কয়েকটি স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। এইসব বোমা তৈরির কারিগরকে তালিকা করা হয়েছে। তালিকা ভিত্তিতে বোমা তৈরির প্রশিক্ষন প্রাপ্তদের ধরতে প্রতিদিন অভিযান চালানো হচ্ছে। এর মধ্যে তালিকাভূক্ত একাধিক নাশকতাকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।

 

গোয়েন্দা সুত্রে জানা গেছে, চলমান সরকার বিরোধি আন্দোলনের নাশকতা করতে কক্সবাজারে পেট্টোল বোমা তৈরির প্রশিক্ষন দিচ্ছে ছাত্রদল। সহিংসতা করার জন্য পেট্টোল বোমা কিভাবে তৈরি করতে হয় ও কিভাবে নিক্ষেপ করতে হয় তা নেতা কর্মীদের জানিয়ে দেয়ার জন্য ফেসবুকের মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। আর তাদের প্রধান টার্গেট হচ্ছে পুলিশ। পুলিশকে টার্গেট করে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করার জন্য ছাত্রদল নেতারা প্রচারণা চালাচ্ছে। পেট্টোল বোমা তৈরির প্রশিক্ষন প্রাপ্ত কয়েকজন ছাত্রদল নেতাকে শনাক্ত করেছে পুলিশ।

 

কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মতিউল ইসলাম রাইজিংবিডিকে জানান, ছাত্রদলের বোমা বিশেষজ্ঞ কেফায়েত উল্লাহকে ধরতে কয়েকদফা অভিযান চালানো হয়েছে। বাকিদের ধরতে তথ্য সংগ্রহ করে অভিযান চালানো হচ্ছে।

 

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ রাইজিংবিডিকে জানান, তালিকা তৈরী হয়েছে। কয়েকজন আটক হয়েছে। অন্যান্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।

রাইজিংবিডি/১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫/সুজাউদ্দিন/নওশের