সাতসতেরো

করোনায় মৃতদের স্মরণে কোভিড-ট্রি

বিষণ্ন এক সময় পাড়ি দিচ্ছে মানবসমাজ। পৃথিবীজুড়েই আজ স্বজন হারানোর হাহাকার। করোনাসৃষ্ট মহামারি রোধে যারা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন তাদের বলা হচ্ছে ‘করোনা যোদ্ধা’। এই তালিকায় চিকিৎসক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সাংবাদিক, সামাজিক সংগঠনসহ বিভিন্ন পেশাজীবীর মানুষ রয়েছেন। অনেকেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। অনেকে মারা যাচ্ছেন। তাদের স্মরণে এবং পৃথিবীতে বাসযোগ্য পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে বৃক্ষরোপণ করছে সামাজিক সংগঠন ‘স্বপ্ন-৩০’। এই গাছগুলোর তারা নাম দিয়েছেন ‘কোভিড-ট্রি’। 

গত ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবসে বরিশালের বাবুগঞ্জ থেকে শুরু হয়েছে কোভিড ট্রি রোপণ কার্যক্রম। খুলনা, পিরোজপুর, মাদারীপুর জেলায়ও বৃক্ষ রোপণের কথা ভাবছে সংগঠনটি। যেখানেই গাছগুলো রোপণ করা হোক, এর ফল বিতরণ করা হবে দুস্থ অসহায়দের মধ্যে। এ কারণে সংগঠনটি প্রাথমিকভাবে ফলদ বৃক্ষ রোপণ করছে। 

সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা লিও নিয়ায মাসুদ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা করোনায় প্রত্যেক মৃত ব্যক্তির জন্য একটি করে গাছ লাগাব। কিন্তু এটি ব্যয়বহুল। ইতোমধ্যে চারশ গাছ লাগিয়েছি।’ করোনা প্রতিরোধে যাদের রয়েছে বিশেষ অবদান তাদেরকেও স্মরণ করবে স্বপ্ন ৩০। এ কারণে পেশা ভাগ করে সেইসব করোনা যোদ্ধাদের স্মরণেও বৃক্ষরোপণ করা হবে জানিয়ে নিয়ায মাসুদ বলেন, ‘চিকিৎসকরাই এখন রিয়েল হিরো। তাদের অবদান ভুলবার নয়। যে সব চিকিৎসক করোনা রোগীর চিকিৎসা করতে গিয়ে মারা গেছেন তাদের নামে প্রথমে বৃক্ষ রোপণ করবো।’

গাছগুলো রোপণ করা হচ্ছে সংগঠনের সদস্যদের পরিচিতদের জমিতে। যাতে সেগুলোর ক্ষতি না হয়। সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে পারে। বন বিভাগ থেকেও এ ব্যাপারে গাছ দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।  

বৃক্ষ রোপণের মূল উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে নিয়ায মাসুদ বলেন, ‘পরিবেশ বাঁচানোটাই গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি এর মাধ্যমে করোনায় মৃতদের স্মরণ করে তাদের আত্মার শান্তি কামনা করা। আমরা এই অঞ্চলের প্রতিটি গ্রামকে একটি মডেল বানাতে চাই। তারপর আমাদের এই কার্যক্রম ছড়িয়ে দিতে চাই দেশব্যাপী।’

স্বপ্ন ৩০ সামাজিক উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কাজ পরিচালনা করে। বৃক্ষ রোপণ এর অন্যতম। উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস প্রায়ই হয়। সংগঠনটি মনে করে গাছ এ ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মানুষকে কিছুটা হলেও রক্ষা করে। এছাড়া পরিবেশগত হুমকি তো রয়েছেই। তাছাড়া দেশের মানুষের পুষ্টি চাহিদা মেটাতেও ফলদ বৃক্ষের প্রয়োজন রয়েছে। ২০৩০ সাল পর্যন্ত এভাবে বৃক্ষ রোপণ করতে চান বলে জানান নিয়ায মাসুদ খান। 

 

ঢাকা/তারা