ফুটবল বিশ্বে যে কয়েকটি দেশ কাতারে মরুর বুকে উত্তাপ ছড়াচ্ছে তার মধ্যে অন্যতম আর্জেন্টিনা। চলতি বিশ্বকাপে ম্যারাডোনার উত্তরসূরীরা রয়েছে দারুণ ফর্মে- মেসির হাত ধরেই তারা শিরোপা ঘরে তুলতে চায়।
পৃথিবীর সব দেশেই রয়েছে আর্জেন্টিনার সাপোর্টার। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম নয়। ফলে যখন মেসি-বাহিনী মাঠে নামে তখন গ্যালারি তো বটেই, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শোনা যায় সমর্থকদের উল্লাস। এর মধ্যে যে কথাটি বলে তারা দলকে সবচেয়ে বেশি সমর্থন দেয় সেটি হলো- ‘ভামোস আর্জেন্টিনা’। এ এক অনুপ্রেরণাদায়ক বাক্য! উজ্জীবিত হওয়ার মন্ত্র! কিন্তু এই বাক্যের অর্থ কী? কোথা থেকেই বা এলো?
‘ভামোস’ স্প্যানিশ শব্দ। বাংলা অর্থ এগিয়ে চলো, এগিয়ে চলো আর্জেন্টিনা। বিশেষ করে যে কোনো জয় উদযাপনে এই বাক্য ব্যবহার করা হয়। এটি মূলত একটি গান। যার প্রথম চার পঙ্ক্তি:
"Vamos, vamos Argentina, vamos, vamos a ganar, que esta barra quilombera, no te deja, no te deja de alentar"
বাংলা অর্থ:
"এগিয়ে চলো, এগিয়ে চলো আর্জেন্টিনা, যাচ্ছি, আমরা যাচ্ছি জয় করতে, এই কট্টর সমর্থকদের জন্য, থামবে না, থামবে না আনন্দ।"
গানটির উৎপত্তি ১৯৭৪ সালে রাজনৈতিক স্লোগান হিসেবে। ফার্নান্দো সুস্টাইতা এবং আর্নেস্টো অলিভেরার লেখা ‘কন্টাজিয়েট মি অ্যালেগ্রিয়া’ নামে একটি গানের সঙ্গে রাজনৈতিক প্রচারণার মাধ্যমে এটি ছড়িয়ে পড়ে। বোকা জুনিয়র্সের মতো ফুটবল ক্লাবের অনুরাগীরা গানটিকে ফুটবলের গানে রূপান্তরিত করে। গানটি আর্জেন্টিনায় অনুষ্ঠিত ১৯৭৮ বিশ্বকাপের জন্য রেকর্ড করা হয়েছিল এবং অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
প্রসঙ্গত, ১৯০১ সালে আর্জেন্টিনার প্রথম জাতীয় ফুটবল দল গঠিত হয়। উরুগুয়ের বিপক্ষে একটি প্রীতি খেলায় প্রথম মুখোমুখি হয় দুই দল। খেলাটি অনুষ্ঠিত হয় ১৯০১ সালের ১৬ মে, যেখানে আর্জেন্টিনা ৩–২ ব্যবধানে জয় লাভ করে।
আর্জেন্টিনা ১৯১২ সাল থেকে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফা এবং ১৯১৬ সাল থেকে তাদের আঞ্চলিক সংস্থা কনমেবলের সদস্য। ১৯০২ সালের ২০ জুলাই, আর্জেন্টিনা প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করে। সেবারও প্রতিপক্ষ ছিল উরুগুয়ে। এই ম্যাচে আর্জেন্টিনা উরুগুয়েকে ৬–০ গোলে পরাজিত করে। আর্জেন্টিনা ফিফা বিশ্বকাপের ইতিহাসের অন্যতম সফল দল, যারা এ পর্যন্ত ২ বার (১৯৭৮ এবং ১৯৮৬) বিশ্বকাপ জয়লাভ করেছে। এ ছাড়া কোপা আমেরিকাতেও আর্জেন্টিনা অন্যতম সফল দল, যেখানে তারা ১৫ বার শিরোপা জিতেছে।