আগের মতো পাতে না কেউ দোস্তালী আর সই! সরল মানুষ কই? যান্ত্রিক ট্র্যাক্টরের যন্ত্রণায় হারিয়েছে কৃষকের লাঙ্গল জোয়াল মই। আগে নবান্ন এলেই ঢেঁকির পাড়ে ধুম পড়ত ভানতে নতুন ধান এখন পল্লীবধূ ধান ভানে না, হারিয়ে গেছে ঢেঁকি ছাঁটা চাল।
এখন রমণীর হাতে থাকে না কাঁচের চুড়ি, চুলে রেশমী ফিতার সাজ প্রেমিককে দেয় না প্রেমিকা রঙ্গিন সুতোর রুমাল করে কারুকাজ। আজ শিল পাটাতে মরিচ বাটতে গিয়ে, চোখে আর লাগে না ঝাল বন-জঙ্গল উজার হয়ে হারিয়ে গেছে হুক্কাহুয়া খেক শিয়ালের পাল।
নারীরা পহেলা বৈশাখ, ফাল্গুন, বিয়ের অনুষ্ঠান ছাড়া পরে না শাড়ি বেনারসি কাতান জামদানি জর্জেট শাড়িতে সাজায় আলমারী। হারিয়ে গেছে নাব্যতা, হারিয়ে গেছে ডিঙি নায়ের পাল বাবা-মায়ের কথা অমান্য করলেই শাসন করে তুলত গায়ের ছাল।
ইনজেকশনে মোটা তাজা করা গরুতে আর হয় না জমির হাল বিষাক্ত গরু খেয়ে কালের বিবর্তনে বিলুপ্ত শকুনের পাল। ডিজিটাল বিবর্তনে হারিয়েছে রেডিও ক্যাসেট ভিসিআর-এর গান হারিয়ে গেছে খড়ম, পিঁড়ি, জাঁতা, শিকা, পালকি আর হুক্কার টান।
বিপন্ন হয়েছে হাডুডু ডাংগুলি গোল্লাছুট ইচিংবিচিং কুতকুত বিলুপ্ত লোকজ ঐতিহ্যের কুলা, ডালা কাঁসা ও পিতলে কারুকাজ। হারিয়ে যাচ্ছে মাটির হাঁড়ি, নকশি পাখা, শীতলপাটি, পুতুল নাচ হারিয়ে গেছে শৈশবের দুরন্তপনা, ঐতিহ্যবাহী বৈশাখী মেলার সাজ।
হারাচ্ছে ভাপা, পুলি, পাটিসাপটা, চিতইসহ বাহারি পিঠার স্বাদ মুখ থুবড়ে পড়েছে, পালাগান বাউলগীতি ও জারী গানের রাত । সংস্কৃতির শেকড় ছিড়ে অপসংস্কৃতিতে আবদ্ধ হয়ে হারিয়ে গেছে ঘটি বাংলার রূপ বৈচিত্রের সাথে হারিয়ে যাচ্ছে বাঙালির মনন রুচি।