ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক মেয়র আনিসুল হক। তরুণদের কাছে মোটিভেশনাল স্পিকার হিসেবে ভীষণ জনপ্রিয় ছিলেন। তার কথা তারুণ্যকে শক্তি যোগাতো। সফল এই মানুষটি মনে করতেন মা একটি শক্তি। মা দিবস উপলক্ষে রাইজিংবিডির আয়োজনে জানিয়ে দিচ্ছি মাকে নিয়ে আনিসুল হকের একটি গল্প।–
যেকোন পরিস্থিতিতে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল আমার মায়ের দোয়া। তোমাদের কাছে আজকে এটা ইমোশনাল গল্প মনে হতে পারে। কিন্তু জীবনে যখন আমার জায়গায় আসবে অথবা আমাদের জায়গায় আসবে তখন দেখবে মা একটি শক্তি। আমার কোনো কিছু হলেই মায়ের পায়ের কাছে শুয়ে পড়তাম আর বলতাম আমার গায়ের ওপর একটা পা রাখো তো মা, আর আমাকে একটা ফুঁ দাও।
আমি যখন ম্যাট্রিক পরীক্ষা দেই আমার অনেক জ্বর হয়েছিল, অনেক জ্বর। সকাল বেলায় মাকে বললাম, মা আমি মনে হয় পরীক্ষা দিতে পারবো না। আমার মা কিন্তু খুব শিক্ষিত নন। তিনি বললেন, এটা কি হয় নাকিরে বাবা? তুমি যদি পরীক্ষা না দাও, তুমিতো এক বছরের জন্য পিছিয়ে যাবে। আমি বললাম, আমি চোখে কিছু দেখছি না। উনি অনেক দোয়া করে দিলেন। এরপর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন, চলো পরীক্ষা দিতে যাই। পরীক্ষা দিতে গিয়ে তিন ঘণ্টার জায়গায় দুই ঘণ্টা পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে গেলাম। তারপর বাইরে বেরিয়ে দেখি বিপর্যস্ত হয়ে মা বসে আছেন। মা বললেন, পরীক্ষা কি শেষ হয়েছে? সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছো? আমি বললাম, না, মাত্র চৌত্রিশ নম্বরের উত্তর দিয়েছি। মা বললেন, পাস কত তে? আমি বললাম পাস তেত্রিশে। তারপর মাকে বললাম, মা তোমার দোয়ার আর কোনো কাজ হবে না। মা বললেন, কাজ না হোক আসো একটা ফুঁ দেই। মা ওখানেই দুই রাকাত নামাজ পড়লেন, একটা ফুঁ দিলেন সারা গায়। হয়তো এটা একটা কাকতালীয় ব্যাপার হতেই পারে, এটা আমি আজও বিশ্বাস করি। পরীক্ষায় কিন্তু চৌত্রিশে চৌত্রিশই পেয়েছিলাম।
তথ্যসূত্র: আনিসুল হকের বক্তৃতা থেকে গ্রন্থিত