সাতসতেরো

সমালোচনা ছাড়িয়ে সমাদৃত ‘বার্বি’

বিশ্বে প্রতি সেকেন্ডে ৩টি ‘বার্বি পুতুল’ বিক্রি হয়। বিশ্বখ্যাত মানব তারকাদের মতো জনপ্রিয় এই পুতুল। শিশুরা বড় মানুষের আদলে গড়া এসব বার্বি পুতুল নিয়ে খেলতে পছন্দ করে। তারা হয়তো তাদের ভবিষ্যৎ দেখতে পায় এসব পুতুলের মধ্যে।

শুরুতে সব বার্বি ছিল শুধু সাদা রঙের। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার পর বার্বির রঙে পরিবর্তন আসতে শুরু করে। বাজারে ৩৫ রকম গায়ের রঙের বার্বি পাওয়া যায়। প্রায় ৯৪ রকমের চুলের বার্বি রয়েছে বাজারে। বার্বিকে বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের প্রতিনিধিত্ব করতে দেখা যায়।

সম্প্রতি সাদা ছড়ি হাতে নিয়ে বাজারে এসেছে বার্বি। ধারনা করা হচ্ছে, এর মাধ্যমে শিশুদের কাছে অন্ধ শিশু ও বড়দের গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়বে।

যুক্তরাষ্ট্রের রুথ হ্যান্ডলারের প্রতিষ্ঠান ‘ম্যাটেল’ বার্বির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। বুথের  ভাবনার খোরাক জুগিয়েছিল শিশুকন্যা বারবারা। ১৯৫০ এর দশকে বারবারা তখন শিশু। যেকোন শিশুর মতো সেও খেলতে ভালোবাসতো। কাগজ কেটে নিজ হাতে পুতুল বানাতো। তার বানানো পুতুলগুলো ছিল তরুণী বা মধ্যবয়সী। তারা আবার নানা পেশার। কেউ ছাত্র, কেউ ব্যবসায়ী, কেউবা চাকুরিজীবী।

বারবারার বানানো পুতুল দেখেই রুথ বুঝতে পারেন শিশুরা নিজেকে বড় মানুষ হিসেবে ভাবতে ভালোবাসে। এরপর তিনি বার্বি বানান। এবং বাণিজ্যিকভাবে অভাবনীয় পর্যায়ের সফলতা লাভ করেন।

সম্প্রতি বাজারে আসা বার্বি সম্পর্কে এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ‘ব্লাইন্ড বার্বি’ অন্ধত্বে ভোগা মানুষের মতো তাকিয়ে থাকে। বার্বির হাতে সাদা ছড়ি। লাঠিটির অগ্রভাগ লাল এবং বাকি অংশ সাদা। ঠিক যেমন অন্ধ ব্যক্তিরা ব্যবহার করেন। 

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বার্বির মধ্যে অন্ধ মানুষের নিখুঁত প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। 

অ্যামেরিকান ফাউন্ডেশন ফর দ্য ব্লাইন্ডের সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে ম্যাটেল এই পুতুল তৈরি করেছে।  ২০১৯ সালে ম্যাটেল ‘বার্বি ফ্যাশনিস্তা’ নামে একটি সিরিজ বাজারে আনে। এই সিরিজটি বার্বি সম্পর্কে বিশ্লেষকদের ইতিবাচক ধারনা দেয় এবং এর গ্রহণযোগ্য আরও বাড়িয়ে দেয়। কারণ এই সিরিজের পুতুলগুলো হুইলচেয়ার, কৃত্রিম পা, হিয়ারিং এইড ও অন্যান্য শারীরিক প্রতিবন্ধকতায় ভোগা মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে।

উল্লেখ্য, বার্বি পুতুল বাজারে আনা হয় ১৯৫৯ সালের ৯ মার্চ। প্রতিবছর ৯ মার্চ বার্বির জন্মদিন হিসেবে পালন করা হয়। বার্বিরা ৭ ভাই-বোন। ৬ জনের নাম হলো— স্কিপার, স্ট্যাসি, চেলসি, ক্রিসি, টড ও টুটি। এদের মধ্যে টড এবং টুটি জমজ। শুরুতে বার্বিকে ফ্যাশন মডেল হিসেবে দেখা গিয়েছিল এরপরে প্রায় ২০০ এর মত কাজ বদলেছে সে! চিড়িয়াখানার ডাক্তার থেকে বিজনেস এক্সিকিউটিভ হিসেবেও বাজারে আনা হয়েছে বার্বিকে।