সাতসতেরো

‘খাবারের অভাবে আমার শিশুটি মরে যাচ্ছে’

প্রতিটি সন্তানই মায়ের বুকের মানিক। যদি এমন হয় যে ২২ বছর সাধনা করে কোনো নারী মা হয়েছেন? সেই মায়ের কাছে সন্তান যে কত মূল্যবান তা কেবল সেই মা জানেন। বলছি ফিলিস্তিনের এক হতভাগ্য মায়ের কথা। যে মা তার শিশুসন্তানকে চোখের সামনে খাবারের অভাবে পুষ্টিহীনতায় ভুগতে দেখছেন। মায়ের চোখের সামনে দিনে দিনে শিশুটির অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আর মা ভাবছেন, শিশুটি হয়তো মারা যাবে!

ফিলিস্তিনি সাংবাদিকেরা গাজায় কান্নারত ওই মায়ের কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। ভিডিওতে দেখা গেছে, ওই মা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন খাবারের অভাবে তার শিশুসন্তানটি মারা যেতে পারে। ওই মা আরও বলছেন, ‘২২ বছরের কষ্টের পর সে আমার কাছে এসেছে। খাবারের অভাবে সে মরে যাচ্ছে।’ 

ক্ষুধার্ত শিশুটি মায়ের কাছে খাবার চায়, পানি চায় কিন্তু মা দিতে পারেন না। কোথা থেকে দেবেন? তার কাছে তো খাবার নেই। দেশে বাইরের ত্রাণ সহায়তাও পৌঁছাচ্ছে না।

এই মা আরব বিশ্বের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, তারা যেন ওই মায়ের কষ্ট অনুভব করেন আর চলমান যুদ্ধ থেকে তাদের রক্ষা করেন।

আল জাজিরা ওই ভিডিওর সত্যতা পেয়েছে।

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধে গাজায় অবরুদ্ধ রয়েছেন প্রায় ২৩ লাখ ফিলিস্তিনি। বর্তমানে সেখানকার পরিস্থিতি ভয়াবহ। ত্রাণসহায়তাকারীরাও মিসর সীমান্তবর্তী রাফা ক্রসিংয়ের মাধ্যমে স্থলপথে গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছোতে পারছে না। ফলে গাজার উত্তরাঞ্চলের মানুষ খাদ্য সংকটে পড়েছেন। এই অবস্থাকে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি দুর্ভিক্ষ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। চলমান যুদ্ধে এখন পর্যন্ত খাবারের অভাবে গাজা উপত্যকাটিতে ৩৪ জনের বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। যুদ্ধে নিহত হয়েছে ১৬ হাজারের বেশি শিশু।

গাজায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহের সুযোগ করে দিতে ইসরায়েলের প্রতি জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বান করেছে কিন্তু সাড়া মিলছে না।

এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গাজায় স্বাভাবিক শিশু জন্ম নিচ্ছে না। অস্বাভাবিক ছোট এবং অসুস্থ নবজাতকের জন্ম হচ্ছে।