সাতসতেরো

হজ পালনকারীদের মৃত্যু হলে যেখানে কবর দেওয়া হয়

জান্নাতুল বাকি মদিনার প্রাচীনতম এবং প্রথম করবস্থান। ৬২২ খ্রিষ্টাব্দে হযরত মুহাম্মদ (সা.) যখন হিযরত করেন সেই সময় এই কবরস্থান প্রতিষ্ঠা করেন। এই কবরস্থানে প্রায় ১০ হাজার সাহাবির কবর রয়েছে। এই করবস্থানের শেষের দিকে রয়েছে  ইসলামের তৃতীয় খলিফা হযরত  উসমান (রা.)-এর কবর। এই করবস্থানেই মদিনায় হজ পালনকারীদের মৃত্যু হলে দাফন করা হয়। মদিনার বাসিন্দারা মারা গেলেও এখানে দাফনের সুযোগ পায়। 

জানা যায়, জান্নাতুল বাকি কবরস্থানের প্রবেশ মুখে আলাদা করে ঘেরাও করে রাখা হয়েছে দুইটি কবর। একটি হযরত ফামেতা (রা.) এর এবং অন্যটি হযরত আয়েশা (রা.)-এর।

হযরত মুহম্মদ (সা.) এর সাহাবিদের ইতিহাস সংরক্ষণের অংশ হিসেবে এই কবরস্থানের শুরুর অংশে যাদের সমাহিত করা হয়েছে তাদের স্থানে এখন আর নতুন করে কাউকে কবরস্থ করা হয় না।জান্নাতুর বাকির একপাশে মরদেহ গোসল করানোর এবং কাফন পরানোর জায়গা রয়েছে। প্রতিদিন এখানে করব জিয়ারত করতে আসেন হাজার হাজার মানুষ। জান্নাতুল বাকিতে করব জিয়ারতের জন্য খুলে দেওয়া হয় প্রতিদিন ফজর ও আসরের নামাজের পর। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পুরুষরা করব জিয়ারত করতে পারেন। তবে নারীদের এই কবরস্থানে কবর জিয়ারত করতে ঢুকতে দেওয়া হয় না। 

মদজিদে নববি ও জান্নাতুল বাকি’র মাঝখানে ‘হারতুত দাগওয়াত’ নামে একটি পাড়া ছিলো বলে জানা যায়। হাগওয়াত পাড়ায় মসজিদে নববির খাদেমরা বসবাস  করতেন। ১৪০৫ হিজরীতে মসজিদে নববি সংস্কারের সময় হারতুত দাগওয়াত জায়গায় স্থানান্তর করা হয়। এরপর থেকে জায়গাটি মসজিদে নববির বারান্দা হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। 

জানা যায়, জান্নাতুল বাকিতে প্রথম দাফন করা হয়েছিল হযরত মুহাম্মদ (সা)-এর দুধভাই হযরত উসমান ইবনে মযঊন (রা.)কে। হযরত মুহাম্মদ (সা.) প্রায়ই শেষ রাতে জান্নাতুল বাকিতে যেতেন। এবং করববাসীদের জন্য দোয়া করতেন।  

ওসমানি খেলাফতের সময় এই কবরস্থানে সাহাবিদের কবরের ওপর স্থাপনা ছিল। পরবর্তীতে সৌদি আরব সরকার এসব স্থাপনা সরিয়ে নেয়। সৌদি বাদশাহ ফয়সাল বিন আবদুল আজিজ এর আমলে উত্তর দিকে কবরস্থান ছয় হাজার মিটার পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হয়।