সাতসতেরো

যেমন হয় আমেরিকার প্রেসিডেন্টের গাড়ি

পদাধিকারবলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বিশেষ গাড়ি ব্যবহার করতে পারেন। এই প্রথা শুরু হয় গত শতাব্দীর প্রায় মাঝামাঝি সময়ে। ১৯৩৯ সালে লিংকন ব্র্যান্ডের একটি বিশেষ মডেলের গাড়ি ব্যবহার শুরু করেছিলেন ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট। বর্তমানে মার্কিন প্রেসিডেন্টদের জন্য রয়েছে ক্যাডিলাক ‘দ্য বিস্ট’ বা ‘দ্য বিস্ট’ গাড়ি। বিশ্বের সবচেয়ে সুরক্ষিত গাড়ি হিসেবে পরিচিত এটি।

এই গাড়িতে রয়েছে উন্নত যোগাযোগপ্রযুক্তি, বাড়তি অক্সিজেন ও প্রয়োজনীয় রক্ত সরবরাহের ব্যবস্থা। আরও আছে অস্ত্রশস্ত্র। গাড়িটি তৈরি করেছে বিশ্বখ্যাত জেনারেল মোটরস কোম্পানি। গাড়ির ওজন প্রায় আট টন। দ্য বিস্ট তৈরিতে খরচ হয়েছে প্রায় ১২ লাখ মার্কিন ডলার। দ্য বিস্ট গাড়িতে মোট সাতজন বসতে পারেন। এই গাড়িতে জানালায় পাঁচটি স্তর আছে। কাচ এবং পলিকার্বনেট দিয়ে নির্মিত গাড়ির জানালা। গাড়ির শুধুমাত্র চালকের পাশের জানালার কাচ নামানো যায়। তাও মাত্র তিন ইঞ্চি। বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ভেদ করে যাবে এমন বুলেটও এই গাড়ির জানালার কাচ ভেদ করতে পারবে না। দ্য বিস্ট গাড়ির বডি তৈরি হয়েছে স্টিল, টাইটেনিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম এবং সিরামিকস-এর কম্বিনেশনে। যা পাঁচ ইঞ্চি মোটা এবং অত্যন্ত শক্ত। গাড়িতে অগ্নিনির্বাপন যন্ত্রও রয়েছে।

প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য মার্কিন সিক্রেট সার্ভিসের বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে চালক হিসাবে বেছে নেওয়া হয়। চালক এতটাই দক্ষ যে, অল্প সময়ে গাড়ি ১৮০ ডিগ্রি ঘোরাতে পারেন।  প্রেসিডেন্টের গতিবিধির ওপর সরাসরি যোগাযোগ রাখে পেন্টাগন। এ জন্য গাড়ির পেছনের সিটে স্যাটেলাইট ফোন রয়েছে। যার সাহায্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সরাসরি পেন্টাগনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। বিস্ফোরণ প্রতিরোধক ফোম দিয়ে পরিপূর্ণ থাকে গাড়ির জ্বালানি ট্যাঙ্ক। ফলে সরাসরি ট্যাঙ্কের মধ্যে হামলা হলেও কোনো বিস্ফোরণ হবার সম্ভাবনা থাকে না। গাড়ির পুরো কাঠামোতেই স্টিল রয়েছে, যা বোমা এবং মাইন থেকে গাড়িকে রক্ষা করতে পারে।

প্রেসিডেন্টের এই গাড়িতে অত্যাধুনিক সেন্সর লাগানো আছে। ফলে যেকোন রকম নিউক্লিয়ার, কেমিক্যাল বা বায়োলজিক্যাল হামলার আগেই সঙ্কেত দিতে পারে। মানবহীন এয়ার ভেহিকলকেও শনাক্ত করতে সক্ষম দ্য বিস্ট।