সাতসতেরো

দেশি ও আদিবাসী বাদ্যযন্ত্রের প্রদর্শনী ‘নিরাময়ের ঐক্যতান’

মোহাম্মদ জাকির হোসেনের তৈরি দেশি ও আদিবাসী ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র নিয়ে ভিন্ন এক প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকা কর্তৃপক্ষ।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) সন্ধায় প্রদর্শনীটির উদ্ভোধন করেন বিখ্যাত বাউলশিল্পী শফি মণ্ডল। অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিদের উত্তরীয় দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। প্রদর্শনীটি কিউরেট করেছেন লুসি তৃপ্তি গোমেজ। অবকল্প আয়োজনে ‘নিরাময়ের ঐকতান’ শিরোনামে এই প্রদর্শনীটি আগামী ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। প্রতিদিন চলবে বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। 

এই প্রদর্শনীতে প্রায় ১০০ ধরনের বাদ্যযন্ত্র স্থান পেয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন ডিজাইনের ৩০টিরও বেশি দোতারা রয়েছে। একতারা রয়েছে ৪০ এর অধিক। এছাড়াও রয়েছে এবাবল,  লাহোরি, ফুলু  ফ্লোয়ারা, দাবিরক্স রুবি, ইগল, ডাল, মিরাত, বাজরাগি, কাজলা, বাউলা ডুগি, সানাই, একতারা, বাঁশি, সরাজ, মিন, একা তানত্রি, সেতারা, কারকা, মাদল ইত্যাদি। আদিবাসীদের বাদ্যযন্ত্রের মধ্যে রয়েছে, খমক, জামবি, প্লেইং বল, হ্যান্ড কাজন, কালিমবা।

প্রদর্শনীতে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পালকি, ১৮৪২ সালের হাতে লেখা বিশ্বহরির পালা ও বিভিন্ন ধরনের গানের বইও রয়েছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাউলশিল্পী শফি মণ্ডল বলেন, ‘‘আমি মনে হয় ৫ মিনিটে দুশো বছর ঘুরে এলাম। এই কাজ একজন পাগল ছাড়া করা সম্ভব নয়। এদেশে যে অসংখ্য মহজনের জন্ম তা আর বিশ্বে কোথাও নেই। এখানেই বেশ অহং বোধ করি। ভাব, বিশ্বাস, ভক্তি বিনয় হলো পাগলের শক্তি। আমি যে দুশো বছর ঘুরে আসলাম এটা আমাদের ঐতিহ্য। আমি এই অনুষ্ঠানের শুভ উদ্ভোদন করছি, সবার চরণে ভক্তি।’’ 

জাকির হোসেন বলেন, ‘‘আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। অবকল্প নামটি আমার বন্ধুর দেওয়া, সে এখন আর নেই। কম্পিউটার সাইন্সে পড়া একজন ছেলে এসব কেন করবে এ নিয়ে অনেকেই অনেক রকম কথা বলেছেন। কিন্তু আমার কাকা আমাকে সহযোগিতা করেছেন। তিনি আমাকে সব ধরনের কাঠ খুঁজতে সাহায্য করেছেন। এ ছাড়াও আমার এই কাজে আরও যারা সাহায্য করেছেন সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা।’’

দর্শনাথী রুদ্র বলেন, ‘‘প্রদর্শনীটি দারুণ। অনেক রকমের বাদ্যযন্ত্র এখানে দেখতে পেলাম। আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে আমাদেরই।’’

উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশের গাইবান্ধায় জন্মগ্রহণ করেন জাকির হোসেন। ২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কলকাতায় সংগীতে অধ্যয়ন করেছেন, ভারতীয় শাস্ত্রীয়, রবীন্দ্রসংগীত, বাংলা লোক এবং আধুনিক সংগীতসহ বিভিন্ন ফর্ম শিখেছেন তিনি।