কক্সবাজারের ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ। যেখানে সমুদ্রের গর্জন আর পাহাড়ের সবুজ মায়া মিলেমিশে তৈরি করে অপূর্ব এক প্রাকৃতিক ছন্দ। শীতের সকালে এই মেরিন ড্রাইভ যেন এক জীবন্ত ক্যানভাস। এখানে মানুষের জীবনযাত্রায় গ্রামীণ সংস্কৃতি মিলেমিশে একাকার। এই শীতে প্রকৃতি ও জীবনের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য চলে আসতে পারেন কক্সবাজারে।
রাখালের কর্মব্যস্ততা: সকালের সোনালি রোদে মেরিন ড্রাইভের পাশে দেখা যায় রাখালদের কর্মব্যস্ততা। মাঠের পথ ধরে গরু নিয়ে যাত্রা শুরু হয় রাখালদের। তাদের হাতে থাকে খু্ঁটি, লাঠি আর মুখে থাকে হাসি। শীতের শীতল বাতাসে গরুগুলোর গলায় দুলতে থাকে ঘণ্টা। ঘণ্টার শব্দ যেন প্রকৃতির সঙ্গে এক সুর মেলায়। রাখালদের গন্তব্য কখনো চারণভূমি, কখনো হাট। জীবনের ছন্দে বাঁধা তাদের প্রতিদিনের এই পথচলা।
কৃষকের ব্যস্ত সকাল: মেরিন ড্রাইভের আশেপাশের গ্রামগুলোতে শীত মানে কৃষকদের নতুন দিনের কর্মসূচি। কেউ লাঙল নিয়ে মাঠে, কেউ শীতকালীন সবজি পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। মরিচ, লাউ, সবুজ মটরশুঁটি, বেগুন, ফুলকপি এসবের সারি সারি ক্ষেত দৃষ্টিনন্দন হয়ে ওঠে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতের কুয়াশা কেটে সূর্যের আলো পড়ে ফসলের গায়ে।
ফুলের রঙে রঙিন মেরিনড্রাইভের দুই পাশ: মেরিন ড্রাইভের দুইপাশে শীতের সকালে ফুটে থাকে নানান রঙের ফুল। ঢোল কলমি, সাগরলতা, সূর্যমুখী, বেগুনি বুনোফুল, লাল জবা কিংবা সাদা কাশফুলের মতো আরও অসংখ্য বুনোফুল চোখে পড়ে। রাস্তার দুই ধারে থাকা এই ফুলগুলো যেন পর্যটক আর স্থানীয়দের জন্য প্রকৃতির এক বিশেষ উপহার। ফুলের সুবাস আর রঙের মেলা এই সড়কের সৌন্দর্যকে আরও বেশি মায়াময় করে তোলে।
গ্রামের অনন্য সকাল: মেরিন ড্রাইভের আশপাশের ছোট ছোট দোকানগুলোতে সকাল থেকেই মানুষের জটলা চোখে পড়ে। দোকানের ধোঁয়া ওঠা চা আর রুটি-পোড়ার গন্ধ শীতের সকালকে আরও উষ্ণ করে তোলে। পাশ দিয়ে ছুটে চলে পর্যটকবাহী গাড়ি। কেউ কেউ থেমে প্রকৃতির শোভা উপভোগ করেন, ছবি তোলেন। এই জায়গার আসল সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে এখানকার সাধারণ মানুষের জীবন ও সংস্কৃতিতে, সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে প্রাকৃতিতে।
শীতে পর্যটকদের আনাগোনা বেশি দেখা যায়। এই শীতে আপনিও দেখে আসতে পারেন কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ এবং এর দুইপাশের সৌন্দর্য।